জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আর্থিকভাবে সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে (অসুস্থ্য মুমূর্ষু/জটিল দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত) গঠিত হল 'উপাচার্য জরুরি চিকিৎসা সহায়তা তহবিল'। গত শনিবার এ নিয়ে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সাথে উপাচার্যের এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান কোন শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী কোন ব্যয়বহুল জটিল, মুমূর্ষু, দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হলে অথবা আকষ্মিক দুর্ঘটনায় পতিত হলে যদি জরুরি ভিত্তিতে অনেক অর্থের প্রয়োজন হয় (যা তার বা তার পরিবারের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়) সেক্ষেত্রে সেই ব্যক্তি বা তার পরিবার 'উপাচার্য জরুরী চিকিৎসা সহায়তা তহবিল' হতে আর্থিক সহায়তার জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবদমান ছাত্র সংগঠন ও গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘর্ষজনিত কারণে আহত শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে অত্র তহবিল থেকে সাহায্যের আবেদন আওতা বর্হিভূত (বিবেচিত হবে না)।
এই সহায়তা তহবিলের জন্য সাবেক শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি (বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে কর্মরত ২ জন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত নন এমন ৩ জন সাবেক শিক্ষার্থীর) সুপারিশ কমিটি গঠিত হবে। তহবিল পরিচালনা করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। এছাড়া ট্রেজারার ও সুপারিশ কমিটির (মনোনীত যেকোন একজনের) যৌথ স্বাক্ষরের মাধ্যমে তহবিলটির ব্যাংক একাউন্ট পরিচালিত হবে। যে কোন ব্যাংক, বীমা, অফিস, প্রতিষ্ঠান, ট্রাস্ট অথবা যে কোন ব্যক্তি এই ফান্ডে অনুদান প্রদান করতে পারবেন। সেই সাথে একটি বিকাশ একাউন্টও থাকবে যাতে ছোট মূলধন খুব সহজেই যে কেউ অনুদান হিসেবে পাঠাতে পারেন। বিকাশের মাধ্যমে প্রাপ্ত টাকা 'উপাচার্য জরুরী চিকিৎসা সহায়তা তহবিল' এ যোগ হবে।
এই তহবিলের সাহায্য পেতে হলে প্রথমেই উপাচার্য বরাবর সরাসরি আবেদন করতে হবে। উপাচার্য আবেদন পত্রটি যাচাইয়ের জন্য সুপারিশ কমিটির কাছে প্রেরণ করবেন। সুপারিশ কমিটি তাৎক্ষনিকভাবে টেলিফোন/অনলাইনে বসে আলোচনার মাধ্যমে আবেদনের প্রয়োজনীয়তা ও যথার্থতা যাচাই করবেন। এরপর আবেদনকারীর অসুস্থ্যতা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলো বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে মতামতের জন্য পাঠাবেন। মেডিকেল সেন্টারে কর্তব্যরত ডাক্তারগণ তা সার্টিফাই করে সুপারিশ কমিটির কাছে পুনরায় প্রেরণ করবেন। সুপারিশ কমিটি মতামতসহ আবেদনটি পুনরায় উপাচার্য বরাবর উপস্থাপন করবেন। উপাচার্য তা গ্রহণ করে চুড়ান্তভাবে তহবিল হতে সাহায্য অনুমোদন করবেন। উপাচার্য/ট্রেজারার/সুপরিশ কমিটির (মনোনীত একজনের) মধ্যে যে কোন দুই জনের যৌথ স্বাক্ষরের মাধ্যমে চেক অনুমোদন করে সাহায্য প্রার্থীর নিকট (তার পরিবারের নিকট) সরাসরি হস্তান্তর করবেন।
এই তহবিলের অর্থ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে উপাচার্য কর্তৃক স্বাক্ষরিত আবেদনপত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও বিশ্বের বিভিন্ন ব্যাংক, বীমা, অফিস, সাহায্যকারী প্রতিষ্ঠান, ট্রাস্ট বা ব্যক্তি বিশেষকে এই তহবিলে টাকা অনুদাননের জন্য অনুরোধ করে চিঠি প্রদান করা হবে। এছাড়াও সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা ফান্ড কালেকশনের জন্য যে কোন ধরণের অনুষ্ঠান, চ্যারিটি খেলা ও শো বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ও বাইরে আয়োজন করতে পারবে।
আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন, উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম, উপ উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আবুল হোসেন, ট্রেজারার প্রফেসর ড. আবুল খায়ের, রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দিক এবং প্রক্টর প্রফেসর ড. তপন কুমার সাহা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন, আমীনুর রহমান (৩য় ব্যাচ), মিনহাজ আহমেদ ভুঁইয়া (১৬ তম ব্যাচ), ফরিদ আহমেদ (১৬ তম ব্যাচ), সালমা রহমান শুভ্রা (২২ তম ব্যাচ) এবং এস.এম. সাদাত হোসেন (২৯ তম ব্যাচ)।
বিডি প্রতিদিন/৯ আগস্ট ২০১৬/হিমেল-০৪