শেরপুর জেলার নকলা উপজেলায় সদ্য জাতীয়করণের ঘোষণাকৃত হাজী জালমামুদ কলেজের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী কর্তৃক দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর নাম সারোয়ার হোসেন রকি। অভিযুক্ত কর্মচারীকে কেন সাময়িক বরখাস্ত করা হবে না এই মর্মে ৭ দিনের মধ্যে জবাব চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
রকি নকলা পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি বাজারদি এলাকার মো. খোকা মিয়ার ছেলে।
জানা গেছে, গত ৩ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে ঝাড়ুদার পরিমল ক্লাস শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ আগে তৃতীয় তলার একটি কক্ষে ঝাড়ু দিচ্ছিলেন। এসময় পাশের কক্ষে ৪/৫ জন ছাত্রীর চেচামেচি শুনতে পান এবং কয়েকজন ছাত্রী ওই কক্ষ থেকে বের হয়ে কলেজ কর্মচারী রকি তাদের এক বান্ধবীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করছে বলে জানায়। এ কথা শুনে ঝাড়ুদার পরিমল ওই কক্ষে যেতে চাইলে দরজা ভিতর থেকে বন্ধ দেখতে পান। তিনি আরেক কর্মচারী দুলুকে ডেকে আনেন এবং দুইজন মিলে দরজা ভেঙে রকির হাত থেকে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করেন।
এদিকে বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর কলেজের অধ্যক্ষ লুৎফর রহমান ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার অপচেষ্টা চালান বলে অনেকে অভিযোগ করেন। কিন্তু গত শনিবার বিষয়টি পুরো শহরে জানাজানি হয়ে গেলে চাপের মুখে ওইদিনই অধ্যক্ষ রকিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। এখন ওই ঘটনাটি নকলায় 'টক অফ দ্যা টাউনে' পরিণত হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত হতে উক্ত কলেজের অধ্যক্ষ লুৎফর রহমানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি। কিন্তু নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজের বেশ কয়েজন প্রভাষক ও কর্মচারী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এটা গোপনীয়তার কোন বিষয় নয়। তবে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করা ছাড়া এ বিষয়ে আর কিছু বলতে তারা নারাজ।
তবে রকির বিষয়ে কলেজের অনেকেই বলেন, সে সব সময় নেশাগ্রস্থ থাকে। মাত্র কয়েক দিন আগে শহরের হলমোড়ে ৩/৪ টি রিক্সা ভেঙে ফেলে, গৌরাঙ্গ নামের এক কলেজ কর্মচারীকে ঘুষি মেরে দাঁত ভেঙে ফেলে এবং ২ বছর আগে নিয়োগ পাওয়ার পর পরই ৩/৪ জন প্রভাষকের সাথে অসদাচরণ করে। বাবা সরকারি দলের নেতা বলে ভয়ে এ ব্যাপারে কেউ মুখ খোলে না।
এ ব্যাপারে কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক ডা. এ এম পারভেজ রহিম জানিয়েছেন, অভিযুক্তকে সাময়িক বরখাস্ত করে তদন্ত কমিটির মাধ্যমে শাস্তি প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ