কুড়িগ্রামে ঘন কুয়াশা ও কনকনে ঠান্ডায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। রাতভর ঝমঝম করে বৃষ্টিরমত পড়ছে কুয়াশা। পাশাপাশি সকালে ও বিকেলে উত্তরিয় হিমেল হাওয়া শীতের মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মিলছে না সূর্যের দেখা।
ঘন কুয়াশার কারণে দিনের বেলাতেও হেড লাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন। এ অবস্থায় গরম কাপড়ের অভাবে চরম দুর্ভোগে পড়েছে ছিন্নমুল ও খেটে খাওয়া মানুষজন। প্রচন্ড ঠান্ডায় মাঠে যেতে পারছেন না কৃষি শ্রমিকরা। বিশেষ করে জেলার নদ-নদী তীরবর্তী এলাকার চর ও দ্বীপ চরে বেশী ঠান্ডা অনুভূত হওয়ায় এখানকার মানুষজন খুড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করছে। ঠান্ডা জনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা। তীব্র শীতে দুর্ভোগ বেড়েছে গবাদী পশু পাখীরও।
কুড়িগ্রাম পৌরসভায় গড়ের পাড় এলাকার মর্জিনা বেওয়া জানান, আমরা গরিব মানুষ কাজ করে ভাত খাই। গরম কাপড় না থাকায় সকালে বের হতে পারি না। কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে শিশুর চিকিৎসা নিতে আসা হযরত আলী জানান, অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে ছেলের ডায়রিয়া হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা নিচ্ছি।
ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৩১ জন শিশু ও একজন বৃদ্ধ কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডাঃ শাহিনুর রহমান সরদার জানান, শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় সদর হাসপাতালে শীত জনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সদর হাসপাতালে মোট ২০৪ জন রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। এর মধ্যে শিশুর সংখ্যা ৬০ জন। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে ৩১ জন শিশু ও ১ জন বৃদ্ধ। তবে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে চিকিৎসক সংকটে রোগীর চাপ সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক জাকির হোসেন জানান, এ অঞ্চলের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯.৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক খান মোঃ নুরুল আমিন জানান, কুড়িগ্রামের শীতার্ত মানুষের জন্য ৫৩ হাজার ১শ' ৮৫ টি কম্বল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যা উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/১১ জানুয়ারি ২০১৭/হিমেল