বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণি প্রজনন কেন্দ্র থেকে আবারো মারা পড়েছে ১৯টি কুমিরের বাচ্চা। শনিবার ও রবিবার দিবাগত রাতে প্রজনন কেন্দ্রের প্যানে (কৃতিম পুকুর) হানা দিয়ে এসব কুমির বাচ্চা খেয়ে ফেলে সুন্দরবনের মাংশভোজী হিংস্র প্রাণিরা। গত দু'দিনে কুমিরের এই ১৯টি বাচ্চার খন্ডিত দেহাবশেষ উদ্ধার করেছে প্রজনন কেন্দ্রের কর্মকর্তা কর্মচারিরা। তবে শরিবার দিবাগত রাতে ১৯টি কুমিরের বাচ্চা খেয়ে ফেলে পার পেয়ে গেলেও রবিবার দিবাগত রাতে আরারো প্যানে কুমিরের বাচ্চা খেতে এসে গুলিতে মারা গেলো মাংশভোজী হিংস্র প্রাণি চিতা বিড়াল (লেপার্ট ক্যাট)।
এখন পর্যন্ত গত ৫ দিনের ব্যবধানে ৪৩টি কুমিরের বাচ্চা চুরি ও মাংশভোজী হিংস্র প্রাণির আক্রমনে মারা গেলো আরো ১৯টি কুমিরের বাচ্চা। সুন্দরবন বিভাগ এতথ্য নিশ্চিত করেছে।
সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণি প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, এর আগে ১ ফেব্রুয়ারি রাতে প্রজনন কেন্দ্রের দুটি প্যন থেকে ৪৩ কুমিরের বাচ্চা পাচার বা চুরির ঘটনা ঘটে। এসময়ে পাচারকারিরা ৪৩টি কুমিরের বাচ্চার মধ্যে ৯টি কুমিরের বাচ্চা মেরে পরিকল্পিত ভাবে ফেলে রেখে যায়। ওই চুরির ঘটনায় জড়িত থাকায় করমজল বন্যপ্রাণি প্রজনন কেন্দ্রে বনকর্মী (লস্কর) মাহাবুব হোসেনকে সাময়িক বরখান্ত ও জাকির হোসেন নামের এক অস্থায়ী কর্মচারীকে চাকুরীচ্যুত করা হয়। প্রজনন কেন্দ্রে এই দুই জনের নাম উল্লেখসহ আরো অজ্ঞান পাচারকারীদের নামে ডাকোপ থানায় মামলা করা হয়। কুমিরের বাচ্চা পাচারের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই করমজল বন্যপ্রাণি প্রজনন কেন্দ্রর কুমিরের বাচ্চাগুলোর প্যানে শনিবার দিবাগত রাতে হানা দেয় মাংশভোজী হিংস্র প্রাণি। মেরে ফেলে ১৯টি কুমিরের বাচ্চা। আবারো কুমিরের বাচ্চা মারা যাবার খবর পেয়ে করমজলে ছুটে আসেন সুুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সাইদুল ইসলাম। সাধারণ ডায়রি করা হয় ডাকোপ থানায়। এই ১৯টি কুমিরের বাচ্চা মারা যাবার বিষয়টি নাশকতা বা অন্য কিছু তা জানতে প্যানগুলোর নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি ক্যামেরা ট্রাপিং’ করা হয়। রবিবার দিবাগত রাতে ক্যামেরা ট্রাপিং’এ ধরা পড়ে মাংশভোজী এক হিংস্র প্রাণি চিতা বিড়াল (লেপার্ট ক্যাট)। সাথে-সাথেই গুলি করে মেরে ফেলা হয় চিতা বিড়ালটিকে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার