পঞ্চগড়ে রেল লাইনে পড়ে থাকা মা ও শিশুর লাশের উপর দিয়ে ট্রেন চালিয়ে যাওয়ায় এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। পার্বতীপুর থেকে ছেড়ে আসা পঞ্চগড়গামী ট্রেনের নিচে ঝাপ দিয়ে এক মা তার শিশুকে নিয়ে আত্মহত্যা করেন।
ঘটনার পরপরই হাজার হাজার এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে জড়ো হয়। এসময় মা ও শিশুটির লাশ রেল লাইনেই পড়ে ছিল।
ঘটনার এক ঘণ্টা পর ট্রেনটি আবার পার্বতীপুরে ফিরে যাওয়ার সময় স্থানীয়রা হাত তুলে থামানোর চেষ্টা করে। কিন্তু ট্রেনটি না থামিয়ে লাশের উপর দিয়েই ট্রেন চালিয়ে যান চালক। এতে পড়ে থাকা লাশ দুইটি ছিন্ন বিছিন্ন হয়ে যায়। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, ট্রেনটি ৫০০ গজ দূরে থাকতেই শত শত মানুষ হাত উচু করে চিৎকার করে থামতে বলে। কিন্তু চালক হর্ণ বাজিয়ে লাশ দুইটির উপর দিয়েই ট্রেন চালিয়ে যান।
স্থানীয় জামেদুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থল থেকে পঞ্চগড় রেল স্টেশনের দূরত্ব মাত্র দেড় কিলোমিটার। ট্রেনটি পঞ্চগড় যাবার সময়ই আত্মহত্যার ঘটনাটি ঘটে। স্টেশন মাস্টার এবং ট্রেনচালক ঘটনাটি জানেন। জেনে শুনে তারা ট্রেন ছেড়ে ঠিক করেননি। অনেকের ক্যামেরায় দৃশ্যটি ধারণ করা আছে। ঘটনাটি তদন্ত করে চালক এবং সংশ্লিষ্টদের বিচার হওয়া উচিত।
পঞ্চগড় স্টেশনের মাস্টার বজলুর রহমান জানান, আত্মহত্যা এবং লাইনে পড়ে থাকা লাশের খবর তিনি জানেন না।
ট্রেনের গার্ড আব্দুর রহিম জানান, লোকজন হাত উঁচিয়ে ট্রেনটি থামতে বলছিল। কিন্তু তাদের হাতে লাল পতাকা ছিল না। তারপরও তাৎক্ষণিকভাবে লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে অফিসে যোগাযোগ করা হলে কর্তৃপক্ষ আস্তে আস্তে ট্রেন চালিয়ে চলে আসতে বলেন।
স্টেশন অফিস সূত্রে জানা গেছে, পার্বতীপুর থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনটি দুপুর ১টায় স্টেশনে পৌঁছায়। আবার দুপুর দেড়টায় পার্বতীপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
উল্লেখ্য, পারিবারিক কলহের জের ধরে দুপুরে পঞ্চগড়গামী লোকাল ট্রেনের সামনে শিশুকে ফেলে রেখে শ্যামলী বসাক (২২) নামে এক নারী ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেন। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন মা ও মেয়ে।
নিহতরা হলেন, আটোয়ারী উপজেলার বারো আউলিয়া গ্রামের শ্যামলী বসাক (২২) ও তার প্রতিবন্ধী শিশু মনি বসাক (২)।
বিকেলে সহকারী পুলিশ সুপার সুদর্শন কুমার রায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
বিডি প্রতিদিন/ ১৩ মে ২০১৭/আরাফাত