সাভারে আল-আমিন নামের এক শীর্ষ সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করতে গিয়ে পুলিশের উপর হামলা ও আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনায় ৩৪ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। শনিবার রাতে বিরুলিয়া পুলিশ ফাড়ির ইনচার্য তারিকুল ইসলাম নিজে বাদী হয়ে ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে এ মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ ও স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গেছে, সাভারের ভবানীপুর এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী আল-আমিন ভবানীপুর এলাকায় তার বাগান বাড়িতে অবস্থান করছিলেন এমন সংবাদের ভিত্তিতে গত শুক্রবার রাতে বিরুলিয়া পুলিশ ফাড়ির ইনচার্য এস আই তরিকুলের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে আল-আমিনকে গ্রেফতার করে। এসময় আল-আমিনের সহযোগীরা পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।
এদিকে এসময় স্থানীয় বিএনপি নেতা ও ভবানীপুর এলাকার জিন্নাত আলীর ছেলে জসিম উদ্দিন ও তার ভাই বশিরসহ আল-আমিনের পরিবারের অন্যান্য লোকজন আশপাশের মসজিতে ডাকাত বলে মাইকিং করতে থাকে। পরে এলাকাবাসী জড়ো হয়ে পুলিশের চার সদস্যকে ঘিরে ফেলে। এসময় তারা বিরুলিয়া পুলিশ ফাড়ির এসআই তারিকুল, এ এস আই এ এস আই মহসিন আহম্দে, কনস্টেবল বাবুল মিয়া, ও শামিম হোসেনের উপর হামলা চালায়। এক পর্যায়ের সন্ত্রাসীর পরিবারের সদস্যরা পুলিশ সদস্যদের শরীরে বিভিন্ন জায়গায় কামড়ে দেয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। পরে স্থানীয়রা তাদেরকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এসময় আল-আমিন হ্যাণ্ডকাফসহ পুলিশের কাছ থেকে পালিয়ে যায়। পরে আল-আমিনকে উদ্দেশ্য করে পুলিশ গুলি ছুড়লে স্থানীয় ইসমাইল নামের এক ফুল ব্যবসায়ী নিহত হয়।
পরে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশের ওই চার সদস্যকে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনার পর দিন শনিবার এস আই তারিকুল বাদী হয়ে পুলিশের উপর হামলা, পুলিশ সদস্যকে মারধর করার অভিযোগে শীর্ষ সন্ত্রাসী আল-আমিন, অস্ত্র ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন ও তার ভাই বশির, আমজাদ, আমেনাসহ ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে সাভার মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় আরো ১৪-১৫ জনকে অজ্ঞাত করা হয়।
এব্যাপারে সাভার মডেল থানার (ওসি) তদন্ত কর্মকর্তা মাহাফুজুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পুলিশের উপর হামলার ও পুলিশের চোখে মরিচের গুড়া ও বালু ছিটেয়ে মারধর এবং পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়াও এ ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও তিনি জানায়। ২ জনকে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে ।
এ ব্যাপারে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার শাহ মিজান শাফিউর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন পুলিশের কোন অস্ত্র খোয়া গেছে কি না তা অনুসন্ধানে ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেছে পুলিশ। পুলিশের পক্ষ থেকেও গঠন করা হয়েছে একটি তদন্ত কমিটি। ঢাকা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ কাজী আশরাফুল আজিমকে প্রধান করে গঠিত ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি রোববার সকালে তদন্ত কাজ শুরু করেছে। তবে ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে এবং ওই ঘটনার সাথে জড়িতদের ধরতে অভিযানের সময় পুলিশের কোনো গাফিলতি ছিল কি না তা তদন্ত করা হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/১১ জুন ২০১৭/হিমেল