আর কদিন পরেই ঈদ। ঈদকে সামনে রেখে তাঁত শ্রমিকদের ব্যস্ততা বেড়ে গেছে কয়েকগুন বেশি। শ্রমিকদের ঘামে ভেজা দুই হাতে নিখুঁতভাবে তৈরী হচ্ছে আধুনিক রুচিশীল ও মনোমুগ্ধকর ডিজাইনের শাড়ী জামদানী, সুতি কাতান, সুতি জামদানী, সিল্ক শাড়ী, সেট, বেনারসি, শেডশাড়ি, থ্রি-পিছ ও হরেক রকমের লুঙ্গি ও গামছা। আর নারী শ্রমিকদের রঙ তুলির আঁচড়ে এবং শাড়ির উপরে বর্ণিল সুতা, বাক ও চুমকি শাড়ীগুলো আরো দৃষ্টিনন্দিত করে তুলছে। উৎপাদিত এসব শাড়ি ও লুঙ্গি-গামছা দেশের চাহিদা মিটিয়ে এখন ভারতসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। তবে পুজি সংকটসহ নানা সমস্যা থাকায় হতাশা হয়ে পড়ছেন তাঁতীরা।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, বৃটিশ সরকার কলের কাপড় বাজারজাত করতে তাঁতীদের হাতের আঙ্গুল কেটে দেয়ায় ঢাকা-টাঙ্গাইলসহ বিভিন্ন এলাকার তাঁতীরা নিজ এলাকা থেকে নৌপথে পালিয়ে এসে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি, এনায়েতপুর ও পাবনা জেলার বেড়া, সাঁথিয়ায় আশ্রয় নেয়। আত্মগোপনে থাকা এসব তাঁতীরাই এক সময় এখানে গড়ে তোলে তাঁত কারখানা। পর্যায়ক্রমে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ, সদর, কাজিপুর, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুরে ও পাবনার সুজানগর, ভাঙ্গুড়া, চাটমোহর, ফরিদপুর ও পাবনা সদরে প্রতিটি উপজেলায় তাঁত শিল্প গড়ে উঠে। বর্তমানে সিরাজগঞ্জে ৩লাখ পাওয়ারলুম ও দেড় লাখ হস্তচালিত হ্যান্ডলুম তাঁত রয়েছে। এর সাথে ১৫-২০ লাখ মালিক-শ্রমিক জড়িত। ঈদকে সামনে রেখে শ্রমিকরা বিরামহীনভাবে ডিজাইন মাস্টারের করা আধুনিক ডিজাইনের জামদানী, সুতি জামদানী, সুতি কাতান, চোষা, সিল্ক চোষা, সিল্ক শাড়ী, সেট, বেনারসি, কটন ওপাড়া, হাফ সিল্ক শেডশাড়ি, থ্রি-পিছ ও হরেক রকমের লুঙ্গি-গামছা তৈরী করছেন। খটখট শব্দে পুরো এলাকা মুখরিত হয়ে উঠেছে। বসে নেই কিশোরী-বয়স্ক নারীরাও। পুরুষের সাথে তাল মিলিয়ে নারীরাও নলী ভরা, সুতাপারি করা, মাড় দেয়া ও রঙ-তুলিতে নকশা আঁকাসহ কাপড় বুননের কাজেও সহযোগিতা করছেন। তরুণ-তরুণীদের কথা মাথায় রেখে ও উন্নতমানের জামদানি নকশা, শেড ও থান কাপড় তৈরি করা হচ্ছে। তবে তাঁতীদের মুলধন ও সুতার দাম বেশীয় হওয়ায় নানা সংকটে রয়েছে তাঁতীরা। আর এ সংকটকে কাজে লাগিয়ে ষ্ট্যান্ডার্ড, আশানত শাহ্, পাকিজা, ফাইভস্টার, অনুসন্ধান, ফজর আলী, বৈঠক, বোখারী, মেমোরী, বাবা, আড়ৎ, দেশের বড় বড় কোম্পানীগুলো এখানে শো-রুম খুলে বসেছে। মুলধনের অভাবে থাকা তাঁতীদের সাথে অফসিজনে এ সকল কোম্পানীর সাথে চুক্তিব্ধ হচ্ছে। তাঁতীদের কাছ থেকে হাজার হাজার পিস শাড়ী-লুঙ্গি তৈরী করে নিয়ে নিজেদের লেভেল লাগিয়ে দ্বিগুন দামে দেশে-বিদেশে বিক্রি কোটি কোটি মুনাফা অর্জন করছেন।
তাঁত মালিক আব্দুল লতিফ জানান, সুতাসহ তাঁতের সকল কাচামালের দাম বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু কাপড়ের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে না। যে কারণে তাঁতীদের প্রতিবছরই লোকসান গুনতে হচ্ছে। তারমতে তাঁত শিল্পকে রক্ষা করতে হলে হয় সুতা ও রংয়ের দাম কমাতে হবে না হলে কাপড়ের দাম বৃদ্ধি করতে হবে।
জেলা প্রশাসক কামরুন নাহার সিদ্দিকা জানান, সিরাজগঞ্জের তাঁতের কাপড়ে বিশ্ববিখ্যাত। এর সুনাম বিদেশও রয়েছে। তাঁত শিল্পকে সিরাজগঞ্জের ব্র্যান্ড হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে লোগোও নির্বাচন করা হয়েছে। সুতার দাম বৃদ্ধি ও পুঁজি সংকটের কারনে তাঁতীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এ কথা স্বীকার করে জানান, বিষয়গুলো নোট আকারে সরকারকে অবহিত করা হয়েছে।
শিরোনাম
- জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স চতুর্থ বর্ষের ফল প্রকাশ
- বিমানবন্দর এলাকার দুই জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণ
- বাসে আগুন দিয়ে করছিলেন ভিডিও, ধাওয়া খেয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে মৃত্যু
- ইমাম প্রশিক্ষণে সৌদি সরকারের সহায়তার আশ্বাস
- শাকসু নির্বাচন বানচালের অভিযোগে প্রশাসনিক ভবনে তালা
- নওগাঁয় বিএনপিতে যোগ দিল আরও ৭ শতাধিক সনাতন ধর্মাবলম্বী পরিবার
- প্রশাসন নিশ্চুপ থাকলে বিপদ আরও বাড়বে : গয়েশ্বর
- নতুন দুই দূতাবাস স্থাপনের প্রস্তাব অনুমোদন
- চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার আহ্বান সেনাপ্রধানের
- আরও ২৩ জেলায় নতুন ডিসি, চার বিভাগে কমিশনার
- ব্যাচেলর পয়েন্টের নতুন চমক স্পর্শিয়া
- শেষ মুহূর্তে গোল হজমে জেতা ম্যাচ ড্র করলো বাংলাদেশ
- সাজা শেষে ৭২ প্রবাসীকে দেশে পাঠাল মালয়েশিয়াস্থ হাইকমিশন
- উচ্চকক্ষে পিআর, সংসদের প্রথম ১৮০ দিনে সংবিধান সংশোধন
- আনুষ্ঠানিকভাবে জানানোর পর গণভোট বিষয়ে সিদ্ধান্ত : সিইসি
- সাঈদ খোকন ও তার বোনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলার অনুমোদন
- ‘নির্বাচনের দিন গণভোটের ঘোষণায় আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের পথ রুদ্ধ’
- ২৩ নভেম্বর বিপিএলের নিলাম
- মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী ডিকেবিএ’র ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা
- ঢাকা ওয়াসার এমডি হলেন আব্দুস সালাম ব্যাপারী
খটখট শব্দে মুখর সিরাজগঞ্জের তাঁতপল্লী
আব্দুস সামাদ সায়েম, সিরাজগঞ্জ:
অনলাইন ভার্সন
বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন
এই বিভাগের আরও খবর