ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায় জোয়ারের পানিতে বেড়ি বাঁধ ভেঙ্গে ৭ গ্রাম ও মনপুরা উপজেলায় ভাঙ্গা বেড়ি বাঁধ দিয়ে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে ৭ গ্রামসহ মোট ১৪ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও ভোলা সদরের রাজাপুরে জেয়ারের পানিতে প্রায় ৫ হাজার মানুষসহ সারাজেলায় অর্ধলাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।
এদিকে নিম্নচাপের প্রভাবে গত ২ দিন ধরে দ্বীপজেলা ভোলার উপর দিয়ে থেমে থেমে ঝড়ো বাতাস ও বৃষ্টি হচ্ছে। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে কয়েক ফুট বেশি পানি হওয়ায় তলিয়ে গেছে জেলার নিম্নাঞ্চল। মেঘনা নদীও উত্তাল হয়ে উঠেছে।
এছাড়াও ভোলা-লক্ষীপুর রুটের ইলিশা ফেরিঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে করে যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছে। ধসে গেছে ঘাটের অনেকাংশ। যার ফলে হুমকির মুখে রয়েছে ভোলা-লক্ষীপুর ফেরিঘাট।
ভোলার রাজাপুর ইউনিয়নের মেম্বার মাসুদ জানান, তার ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের আবদুর জব্বার শেখের বাড়ির এলাকায় বেড়ি বাঁধের কাজ যথা সময় শেষ না করায় মেঘনার জোয়ারের পানিতে পুরো এলাকা প্লাবিত হয়। এতে করে ওই এলাকার ৪/৫ হাজার লোক পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বাবুল আক্তার জানান, গত ১৭ মে রাজাপুরের ওই এলাকায় ২২৯০ মিটার বেড়ি বাঁধ নির্মানের কাজ ঠিকাদার শুরু করেন। কিন্তু হঠাৎ করে নিম্নচাপ হওয়ায় তারা সম্পন্ন করতে পারেনি। তারা দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, মেঘনার পানির চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় ভোলা-লক্ষীপুর রুটের ইলিশা ফেরিঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। ধসে গেছে ঘাটের অনেকাংশ। পানিতে ডুবে থাকায় ফেরি ও সিট্রাকের যাত্রীরা প্লাটুনে উঠা নামা করতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে। নৌকা দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে তাদের চলাচল করছে।
ফেরির দায়িত্বে থাকা বিআইডব্লিউটিসি’র ভোলা-লক্ষীপুর ফেরি সার্ভিসের ম্যানেজার মো. আবু আলম জানান, ঈদের আগেই পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বিআইডব্লিউটিএ ওই ঘাট জরুরীভাবে সংস্কার না হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।
অপর দিকে জেলার তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের চৌমোহনী এলাকায় রবিবার রাতে বেড়ি বাঁধ ভেঙ্গে ৭ গ্রাম প্লাবিত হয়। এতে করে বালিয়া কান্দি,দেওয়ানপুর, ঘোষের হাওলা,দক্ষিন শিবপুর,ইন্দ্র নারায়নপুর, চাপড়ি,দালাল কান্ধি গ্রামের অন্তত ১৫ হাজার লোক জোয়ার ভাটায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী কায়সার আহমেদ জানান, ওই এলাকায় তাদের নতুন বেড়ি বাঁধ নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। হঠাৎ করে নিন্মচাপের প্রভাবে এ ঘটনা ঘটে। পানি কমে গেলে দ্রুত বাঁধ নির্মাণ করা হবে।
অন্যদিকে ভাঙ্গা বেড়ীবাঁধ দিয়ে অস্বাভাবিক জোয়ারে ভোলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মনপুরা উপজেলার ৭ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে রমযানে দুর্ভোগ পড়েছে উপজেলার মনপুরা ও হাজিরহাট ইউনিয়নের অন্তত ৩০ হাজার মানুষ। এছাড়াও প্রায় ৫ শতাধিক পুকুর ও ঘেরের মাছ জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডিভিশন-২ এর উপ-সহকারি প্রকৌশলী আবুল কালাম বলেন, বর্ষায় ভাঙ্গা বেড়ীবাঁধের কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। তারপরও মেশিনের মাধ্যমে দ্রুত কাজ করার জন্য ঠিকাদারদের বলা হয়েছে।