সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে স্কুল শিক্ষিকাসহ দুই নারীর বিরুদ্ধে সমকামিতার অভিযোগ ওঠেছে। শুধু তাই নয়, এদের বিরুদ্ধে এলাকার মেয়েদের প্রলোভনে ফেলে অবৈধ কার্যক্রমে লিপ্ত করার অভিযোগও রয়েছে। একজন শিক্ষিকার এমন কান্ডে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা অফিসার ও পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। সমকামি দুই নারী হলো-কামারখন্দের ডি.ডি শাহবাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ও নান্দিনামধু গ্রামের মৃত রিয়াজ উদ্দিনের মেয়ে বিলকিস খাতুন এবং বড়কুড়া গ্রামের নাজিমুদ্দিন প্রামানিকের মেয়ে মরিয়ম খাতুন। আর এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় নিরীহ স্বামীর বিরুদ্ধে মিথ্যা ধর্ষণ মামলা করা হয়েছে।
মরিয়মের স্বামী আব্দুর রহমান অভিযোগ করে জানান, প্রায় তিন বছর আগে তিনি মরিয়মকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। কিন্তু বিয়ের পর থেকে স্ত্রী মরিয়ম মোবাইলে সারাক্ষণ কথা বলত। পরে জানতে পারি সে স্কুল শিক্ষিকা বিলকিসের সাথে কথা বলত। নিষেধ করা সত্ত্বেও মরিয়ম শোনে না। একপর্যায়ে স্কুল শিক্ষিকা বিলকিস তার স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে দুই সন্তানসহ আমার দ্বিতীয় স্ত্রী মরিয়মের বাড়িতে চলে আসে। এ নিয়ে দ্বন্ধ শুরু হলে দ্বিতীয় স্ত্রী মরিয়মের চাপে ২০১৫ সালের ৫ মে স্কুল শিক্ষিকা বিলকিসকে তৃতীয় বিয়ে করি। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পর দেখতে পারি তারা দুজনে ঘরের দরজা বন্ধ রেখে দীর্ঘসময় কাটায়। একদিন দেখতে পাই, ঘরের দরজা বন্ধ করে দু'জনে সমকামিতায় মিলিত হয়েছে। তখন বিষয়টি বাড়ির সকলেই দেখে ফেলে। এ নিয়ে পরিবারের মধ্যে ঝগড়া হলে স্কুল শিক্ষিকা বাড়ি থেকে চলে যায়। পরে মরিয়মও তার সাথে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। বর্তমানে তারা কামারখন্দ উপজেলার জামতৈল গ্রামের মুছা মন্ডলের বাসা ভাড়া নিয়ে এ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় তাদের অবৈধ কার্যক্রম বন্ধের জন্য দুই জনকে বোঝানের চেষ্টা করি। কিন্তু তারা আমাদের কথা না শুনে উল্টো আমাকে ডিভোর্স দেয় এবং আমাকে ফাঁসানের জন্য মরিয়ম মিথ্যা ধর্ষণ মামলা দায়ের করে। আর মামলার স্বাক্ষী দেয় আমার তৃতীয় স্ত্রী স্কুল শিক্ষিকা বিলকিসকে। এ অবস্থায় মিথ্যা মামলা কাঁধে নিয়ে আমি পালিয়ে বেড়াচ্ছি। তিনি আরো জানান, বিষয়টি নিয়ে বিলকিসের সাবেক শ্বশুর ও মরিয়মের মা শিক্ষা অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
মরিয়মের মা রহিমা খাতুন জানান, আমার মেয়ে মরিয়ম ও স্কুল শিক্ষিকা বিলকিস সমকামিতা করে সমাজকে নষ্ট করে ফেলছে। আমি নিষেধ করায় আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। বর্তমানে তারা জামতৈল গ্রামে জনৈক মুছার বাড়িতে থেকে এ অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিবাদ করায় নিরীহ আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা ধর্ষণ মামলাও করেছে। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।
এ বিষয়ে স্কুল শিক্ষিকা বিলকিসে সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি রাগান্বিত হয়ে বলেন, আমরা যা খুশি করব, তাতে আপনাদের কি? আপনারা লিখে যা পারেন করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আকন্দ মোহাম্মদ ফয়সাল উদ্দিন জানান, লিখিত অভিযোগ পাবার পর কামারখন্দ থানাকে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
কামারখন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাসুদেব সিনহা জানান, অভিযোগ পাবার পর প্রাথমিকভাবে দু'জনকে সংশোধনের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। তারপরেও না শুনলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার