কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে প্রিভেইল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোঃ একরামুল হক মজুমদারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নের কৈয়ারধারী গ্রামের মৃত আলী আশ্রাফের। মঙ্গলবার বিকেলে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলায় সাজা হয়েছে।
চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি আবুল ফয়সল জানান, অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে একরামের বিরুদ্ধে ১৪টি প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ৩টি মামলায় সাজা হয়েছে। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর সোমবার রাতে তাকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
ভুক্তভোগী গ্রাহকরা জানান, একরামুল হক ইসলামী শরিয়াভিত্তিক পরিচালনার কথা বলে ২০০৬ সাল থেকে প্রিভেইল কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড (রেজিঃ নং- ১৫২/০৬) নামের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার পদুয়ারবাজার বিশ্বরোড এলাকার হাকিম প্লাজার দ্বিতীয় তলায় প্রধান কার্যালয় খোলে। এছাড়া ঢাকা পুরানা পল্টনে ৫৫/বি-নোয়াখালী টাওয়ার, চট্টগ্রামের পাঁচলাইশের ৬নং মুরাদপুরের মদিনা মার্কেটের ৩য় তলায় ও কক্সবাজার, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম, বরুড়া, নাঙ্গলকোট, বাঙ্গড্ডা, দেবিদ্বার, লাকসাম, নগরীর কান্দিরপাড়, মোগলটুলীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রিভেইল গ্রুপের অর্ধশত শাখা অফিস খোলে।
এসব অফিসে দালালের মাধ্যমে প্রতিমাসে প্রতিলাখে ২ থেকে আড়াই হাজার টাকা মুনাফা এবং চাহিবা মাত্র আসল টাকা ফেরত দেয়ার অঙ্গীকারে শত শত মানুষকে প্রলুব্ধ করে অর্থ সংগ্রহ করে। এছাড়া জমাকৃত টাকায় স্বল্প মেয়াদে দ্বিগুণ-তিনগুণ মুনাফা দেয়াসহ কিস্তিতে ফ্ল্যাট, জমি দেয়ার নামে বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে হাজার কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করে। চার বছর আগে থেকে প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের জমা টাকা বা লভ্যাংশ না দিয়ে কৌশলে তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে নেয়। ক্রমান্বয়ে সব অফিসে তালা লাগিয়ে একপর্যায়ে নগরীর বাসাবাড়ি ছেড়ে গা ঢাকা দেয় প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকসহ কর্মকর্তারা। কুমিল্লার পদুয়ারবাজার বিশ্বরোডের প্রধান কার্যালয়সহ সব কার্যালয়ে তালা ঝুলতে দেখা গেছে। কোনো কোনো স্থানে অফিস বন্ধ করে সাইনবোর্ডও খুলে ফেলা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/১৩ জুন ২০১৭/হিমেল