পাবনায় নিখোঁজের ১২ দিন পর এক গৃহবধূর লাশ সেফটি ট্যাক থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে জেলার সাথিয়া উপজেলার কাথিনাথপুর ইউনিয়নের ছাতক বরাট গ্রাম থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত গৃহবধূ ওই গ্রামের রজব আলীর ২য় স্ত্রী কুলসুম খাতুন (২৭)।
সাথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কমকতা হাসান ইমাম বলেন, ছাতক বরাট গ্রামের রজব আলীর প্রথম স্ত্রী মারা গেলে গত আড়াই বছর পূর্বে বেড়া উপজেলার রাকসা নতুনপাড়া গ্রামের আবুল কালামের মেয়ে কুলসুমের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই রজব আলীর দুই ছেলে উজ্জল হোসেন ও নজরুল ইসলাম সৎ মাকে বিভিন্নভাবে নিযাতন করতে থাকে। সম্প্রতি কুলসুম অন্তঃসত্ত্বা হলে তার উপর নির্যাতনের মাত্রা আরো বেড়ে যায়।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৯ জুন রজব আলীর দুই ছেলে উজ্জল ও নজরুল কুলসুমকে ব্যাপক মারধোর করে। এক পর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তারা কুলসুমকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। কুলসুমের বাবা-মা খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে পরদিন তার মা মাজেদা বেগম বাদী হয়ে সাথিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধারের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়েও ব্যার্থ হয়।
এদিকে সোমবার সকালে ছাতক বরাট গ্রামের বিদেশ প্রবাসী মধু মিয়ার বাড়ির পাশ দিয়ে লোকজন যাওয়ার সময় গন্ধ পেয়ে সমবেত হয়ে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই বাড়ির সেফটিক ট্যাঙ্ক থেকে অর্ধগলিত কুলসুমের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্যে পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন।
উল্লেখ্য, এই ঘটনার পর থেকেই রজব আলীর দুই ছেলে উজ্জল ও নজরুল স্ব স্ব স্ত্রী নিয়ে পলাতক রয়েছে। সম্পত্তির লোভে দুই ছেলে অন্তঃসত্ত্বা সৎ মাকে হত্যা করে পালিয়ে আছে বলে পুলিশের ধারনা। তবে তাদের গ্রেফতারে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে কাশিনাথপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়াডের সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, কুলসুমের বিয়ের পর থেকেই রজবের দুই ছেলে তার উপর অমানুষিক নির্যাতন করে আসছে। ধারনা করা হচ্ছে তারাই অন্তঃসত্ত্বার কথা শুনে সম্পত্তির ভাগ দেওয়ার ভয়ে সৎ মাকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে।
বিডি প্রতিদিন/১০ জুলাই ২০১৭/হিমেল