সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা সদরের তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে মাঠের মধ্যে বিশাল প্যান্ডেল তৈরি করে ভুরিভোজের আয়োজন করেছে সরকার দলীয় স্থানীয় এমপি ম.ম আমজাদ হোসেন মিলন। এমপির স্ত্রী মিসেস ডেউজি মিলন, ২ ছেলে ম. ম জাকির হোসেন জুয়েল ও ম.ম জার্জিয়াস মিলন রুবেল হজ্বব্রত পালনের জন্য ২৪ জুলাই মক্কা মদিনার পথে যাত্রা করবেন-এ উপলক্ষে এ ভুরিভোজ ও নামকাস্তে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এতে বিএনপি, জামায়াত ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। তবে স্থানীয়রা বলছে- আগামী সংসদ নির্বাচনী নেতাকর্মীদের পক্ষ রাখতে এ ভুরিভোজের আয়োজন করা হয়েছে।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা জানান, রায়গঞ্জ-তাড়াশের সংসদ সদস্য মারা যাবার পর বিনাভোটে ম.ম. আমজাদ হোসেন মিলন এমপি নির্বাচিত হন। এমপি হবার পরই নানা বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। তারা বিতক কর্মকান্ডে স্থানীয় আওয়ামী লীগ বিব্রতকর অবস্থায় পড়ছে। এমনকি এলাকাবাসীও তাদের পরিবারকে একঘরে করে রেখেছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী থেকে শুরু করে জনগণকে থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছেন এমপি মিলন। এ অবস্থায় নানা কৌশল অবলম্বন করে কর্মীদের কাছে টানার চেষ্টা করছেন। এরই ধারাবাহিকতা স্ত্রী ও ছেলেদের হজ্ব পালনের যাত্রাকে পুঁজি করে তাড়াশ ডিগ্রি কলেজ, ইসলামিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও তাড়াশ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভুজিভোজের আয়োজন করেন। ক্ষমতার দাপটে তিনটি প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে মাঠের মধ্যে বিশাল প্যান্ডেল তৈরির পাশাপাশি এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কক্ষের ভিতরেও আগতদের খাওয়ানো হয়। প্রায় ৪ হাজার অতিথির জন্য ৫টি গরু ও ৫টি ছাগল জবাই দেয়া হয়। প্যান্ডেল তৈরি শুরু হয় মঙ্গলবার থেকে। রান্নাও করা হয় সেখানেই।
তাড়াশ মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম দুপুরে মোবাইলে জানান, স্কুলের অফিস খোলা রয়েছে। মাঠে এমপি সাহেবের অনুষ্ঠান চলছে। তাকে (এমপি) তো আমাদের সহায়তা করতেই হবে। এ অবস্থায় স্কুলের শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসবে কি-না সেটা তাদের ব্যাপার।
তাড়াশ ইসলামিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম জানান, স্কুলে শিক্ষার্থীদের চলমান পরিক্ষা ১টায় শেষ হয়েছে। অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে ১টার পর। এতে তেমন কোন অসুবিধা হয়নি বলেও দাবি করেন প্রধান শিক্ষক।
তাড়াশ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান মনি জানান, এমপির অনুষ্ঠানের কারণে আধা বেলা কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে আপনার যদি কিছু জানার থাকে, তাহলে মোবাইলে কথা নয়, সামনে আসুন এই বলেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন তিনি।
এ বিষয়ে এমপি ম.ম আমজাদ হোসেন মিলন বলেন, আমি কোন প্রতিষ্ঠান বন্ধ করিনি। কলেজের অধ্যক্ষের অনুমতি নিয়েই অনুষ্ঠান করছি। গত রাত থেকে কলেজের কক্ষ ছাড়া কোন অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের কক্ষও ব্যবহার করা হয়নি। অনুষ্ঠানে ৩টি থানার (তাড়াশ, রায়গঞ্জ ও সলঙ্গা) দলীয় নেতাকর্মী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এসেছেন।
এ বিষয়ে জানতে সদ্য যোগদানকারী তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলমগীর কবিরের ব্যবহৃত সরকারী মোবাইল ফোনে বার বার কল দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার