প্রতি বছরের ন্যায় এবারও দেশ সেরা এবং ব্যায় বহুল পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে নোয়াখালীতে। নোয়াখালী জেলা শহরের মাইজদী নাপিতের পোলের পূর্ব পাশ্বে মালঞ্চ সংঘের উদ্যোগে এবার এক হাজার দুই হাত বিশিষ্ট প্রতিমা স্থাপন করা হয়েছে।
জেলার ভক্তরা ছাড়াও বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার হাজার নারী পুরুষ ভিড় করছে। এছাড়া বাণিজ্য নগরী চৌমুহুনীতে এ বছরই প্রথম মণ্ডপগুলো তৈরী করা হয়েছে ভিন্ন ভিন্ন থিম নিয়ে। রোহিঙ্গা, বৃদ্ধাশ্রমসহ সমসাময়িক দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে তুলে ধরা হয়ে চিত্র কর্মের মাধ্যমে।
নোয়াখালীতে এ বছর ১৬০টি পূজা মণ্ডপে ভক্ত অনুসারীরা পূজা দিচ্ছেন। অতিবৃষ্টি এবং বন্যার কারণে কিছুটা জৌলুস কমলেও প্রতিযোগিতার কারণে প্রতিটি পূজা মণ্ডপ সাজানো হয়েছে বিভিন্ন থিম নিয়ে। এ ধরনের থিম এর আগে কলকাতায় দেখা গেলেও এবারই প্রথম নোয়াখালীতে মন্ডপ তৈরী হয়েছে বর্তমান সময়ের বিভিন্ন দেশী এবং বিদেশী সমস্যা ও সংকট নিয়ে।
চৌমুহুনীতে মণ্ডপে মণ্ডপে চিত্রকর্ম এবং মূর্তির মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা, নারী নির্যাতন, শিশু হত্যা, ইভটিজিং, বাল্য বিবাহ।
জেলার চৌমুহনী শহরের বিজয়া পূজা মণ্ডপে তুলে ধরা হয়েছে রোহিঙ্গা সমস্যা এবং নারী নির্যাতন। মানুষ যেন ধর্মীয় অনুশাসন মেনে শরণার্থীদের সাহায্যে পাশে এসে দাঁড়ায়।
দশভুজা পূজা মন্ডপে তৈরী করা হয়েছে ৫১ ফিট উচু দেশের সর্বোচ্চ অসুর। অসুরকে দমন করার জন্য নানান থিম এখানে তুরে ধরা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে যেন দেশের সকল দানবীয় কর্মকাণ্ড বন্ধ হয়ে যায়।
নবদূর্গা পূজা মণ্ডপ তৈরী করা হয়েছে ঈশ্বচন্দ্র বিদ্যাসাগর এর পাঠশালা। বর্তমান সময়ের পিছিয়ে পড়া মানুষ এবং প্রতিবন্ধীদের জ্ঞান অর্জনে এগিয়ে আসতে সবাইকে এ মণ্ডপের মাধ্যমে আহ্বান জানানো হয়।
ত্রিশূল পূজা মণ্ডপে তৈরী করা হয়েছে বৃদ্ধাশ্রম। সন্তানরা যেন হিন্দু ধর্ম মতে মাতাপিতার প্রতি যত্নশীল হন। দেশের সব বৃদ্ধাশ্রম যেন বন্ধ হয়ে যায়।
এ ব্যাপারে মালঞ্চ সংঘের সহ সভাপতি পবিত্র মজুমদার টুটন জানান, মাইজদী মালঞ্চ সংঘের উদ্যোগে এবার নোয়াখালী তথা দেশসেরা একহাজার দুহাত বিশিষ্ট প্রতিমা নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিদিন হাজার হাজার ভক্তরা দেখার জন্য ভিড় করছে। এতে আমরা খুবই আনন্দিত।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সহ সভাপতি বিনয় কিশোর রায় বলেন, লাখ লাখ টাকা খরচ করে কেবল দেখার জন্য মণ্ডপগুলো তৈরী করা হয়নি। এখান থেকে পূজারীরা যেন শিক্ষাগ্রহণ করতে পারে।
পুলিশ সুপার মো. ইলিয়াছ শরীফ পিপিএম বলেন, সবাই মিলে মিশে ও সম্প্রদায়িক সম্প্রতি রক্ষা করে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের এ বড় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব যেনো নিরাপদে নিশ্চিন্তে পালন করতে পারে সে লক্ষ্যে পূজা মণ্ডপগুলোকে তিনটি ভাগে বিভক্ত করে ব্যাপক নিরপাত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করার হয়েছে।
ভক্ত পূজারীরা এসব দেখে ধর্মীয় অনুশাসক মেনে চলেন। তাহলে পৃথবীতে মা দূর্গার আগমন হবে সার্থক। ধরাধামে ধরা দিবে সুখ, শান্তি, প্রতিষ্ঠিত হবে মানবতা।
বিডি প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন