বরিশাল সদর উপজেলার রায়পাশা-কড়াপুর ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহি পপুলার মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি নিয়ে পুরনো বিরোধের জের ধরে দেশীয় প্রজাতির কয়েক হাজার কৈ মাছ হত্যার অভিযোগ উঠেছে। অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা বিষ প্রয়োগ করে কৈ মাছ হত্যা করে একে অপরের ওপর দোষ চাপিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েলের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ। এ নিয়ে ওই এলাকায়র সাংঘর্ষিক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফরিদউদ্দিন জানান, চলতি বর্ষা মৌসুমে বিদ্যালয়ের মাঠে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হলে আশপাশের ডোবা-নালা থেকে দেশীয় জাতের কৈ মাছ প্রবেশ করে মাঠের জঙ্গলে আশ্রয় নেয়। পরবর্তীতে ওই মাছগুলো ডিম ছেড়ে পোনা উৎপাদন হলে হাজার হাজার কৈ মাছে মাছে ভরে যায় স্কুল মাঠে জমে থাকা পানিতে। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি সভা করে মাছগুলো লালন-পালন করে বর্ষা মৌসুম শেষে বিক্রি করে বিদ্যালয় তহবিলে টাকা জমা করার সিদ্ধান্ত নেয়। সে অনুযায়ী তিনি মাঠে থাকা মাছগুলো পরিচর্যা করতে থাকেন। এই ইতিবাচক উদ্যোগকে স্থানীয় একটি কুচক্রি মহল বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ঘায়েল করার হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে। তারা ‘বিদ্যালয়ের মাঠে মাঠ চাষ’ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশ করে। ওই সংবাদের জের ধরে জেলা প্রশাসক মাছগুলো অবমুক্ত করার নির্দেশ দেন। বৃহস্পতিবার সকালে মাঠের পানিতে শত শত দেশীয় কৈ মাছ মরে ভেসে ওঠে।
রায়পাশা-কড়াপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা হাবিবুর রহমান খোকন জানান, মাঠে কৈ মাছ চাষ করায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা বন্ধ হয়ে যায়। এ নিয়ে সংবাদপত্রে সংবাদ প্রকাশিত হলে জেলা প্রশাসক প্রধান শিক্ষক ফরিদউদ্দিনকে কৈ মাছ অবমুক্ত করার নির্দেশ দেন। প্রধান শিক্ষক মাছ অবমুক্ত না করে বিষ প্রয়োগ করে মাছগুলো হত্যা করেন।
প্রধান শিক্ষক ফরিদউদ্দিন ও বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আনিচুর রহমান দুলাল জানান, কিভাবে কৈ মাছ মরলো তা তারা জানেন না। স্থানীয়রা বলাবলি করছে, পাানিতে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে। আবার পানি দূষিত হয়ে মাছের মৃত্যু হতে পারে। প্রধান শিক্ষক বলেন, প্রায় ৬ মাস আগে বহিস্কৃত সভাপতি আনোয়ার হোসেন পলাশ বিদ্যালয়ের মাঠে কৈ মাছ লালন-পালন নিয়ে ফেসবুকে অপপ্রচার চালান।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান খোকন বহিস্কৃত সভাপতির পক্ষের লোক। বৃহস্পতিবার ভোরে বিদ্যালয় খোলার আগেই চেয়ারম্যান খোকন কতিপয় ফটোসাংবাদিক সঙ্গে নিয়ে বিদ্যালয়ে হাজির হওয়ার বিষয়টিও রহস্যজনক। তবে চেয়ারম্যান খোকন এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার