ঠাকুরগাঁও জেলা তাঁতী লীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম রবিকে লাঞ্চিত ও মুক্তিপণের জন্য অপহরণ করার প্রতিবাদে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক এমপি ইমদাদুল হকের কুশ পুত্তলিকা দাহ করা হয়েছে।
রবিবার দুপুরে রানীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ হাটের চৌরাস্তায় রবিউল ইসলাম রবির অনুসারীরা ওই নেতার কুশ পুত্তলিকা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।
এ সময় আ’লীগ নেতা রবিউল ইসলাম রবি অভিযোগ করে বলেন, আমি গত বৃহস্পতিবার রাত ১১ টায় পীরগঞ্জ উপজেলার বাঁশগাড়া পূজা মন্ডপে যাই। এসময় সাবেক এমপি ইমদাদুল হকের সমর্থকরা আমাকে পিস্তল ঠেকিয়ে মন্ডপ থেকে টেনে হিচড়ে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে, আড়াই লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয় সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে বলে জানান এই আওয়ামী লীগ নেতা।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় তিনি পীরগঞ্জ উপজেলার বাঁশগাড়া পূজামণ্ডপে যান ঠাকুরগাঁও জেলা তাঁতী লীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি। সেখানে শিশুদের আরতিনৃত্য দেখে মুগ্ধ হয়ে কিছু টাকা দেওয়ার জন্য মঞ্চে উঠেছিলেন। মণ্ডপের মধ্যে আরেক নেতা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক এমপি মো. ইমদাদুল হকের সমর্থকরা উপস্থিত। তারা ‘এখানে কী?’ বলেই মারল থাপ্পড়। মঞ্চ থেকে টেনে-হিঁচড়ে নামিয়ে পিস্তল উঁচিয়ে রবিরই পাজেরো গাড়িতে ওঠায়। এরপর রবি পীরগঞ্জ থানায় অভিযোগ করেন। ইমদাদ ও তার সাঙ্গোপাঙ্গসহ ৪০ ব্যক্তি তাকে গাড়িতে করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে আটকে রাখেন। মুক্তির জন্য ২৫ লাখ টাকা দাবি করে। রাত সাড়ে ৩টার দিকে আড়াই লাখ টাকা এবং তার গাড়িচালকের মোবাইল ফোনটি অপহরণকারীদের দিয়ে মুক্তি পান। রবিউল ইসলাম রবির বাড়ি রানীশংকৈল উপজেলার নেকমরদে। তিনি রাজনৈতিক প্রভাব প্রতিপত্তি সৃষ্টির লক্ষ্যে ‘অন্যের এলাকা’য় গিয়েছিলেন। তাই সাবেক এমপি ইমদাদের সমর্থকরা ক্ষেপে গিয়েছিলেন। রবি অভিযোগ করেন, তাকে ছেড়ে দেওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা বলে ‘এই এলাকায় আর কখনো আসবি না। এলে তোকে মেরে লাশ গুম করে ফেলা হবে। ’ তার কাছ থেকে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষরও এলাকার বাসিন্দারা বলেন, দুর্গাপূজা উপলক্ষে রবি বিভিন্ন মণ্ডপ পরিদর্শন করে আর্থিক অনুদান দিচ্ছিলেন। মণ্ডপে মণ্ডপে গিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময়ও করছিলেন। এতে প্রতিপক্ষ ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে অপমান করার অপেক্ষা করছিল। পরে দিন ওই ঘটনা নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে সাবেক এমপি ইমদাদুল হকের একদল সন্ত্রাসী ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’-এর একটি কপিও বিলি করতে দেয়নি।
এ ব্যাপারে সাবেক এমপি ইমদাদুল হককে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, রবি এই এলাকার কেউ নন। কিছুসংখ্যক ছেলেপেলে তাকে আটক করলে, তিনি এই এলাকায় আর কখনো আসবেন না মর্মে মুচলেকা দিয়ে চলে যান। পিস্তল ঠেকিয়ে তাকে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ ইমদাদ অস্বীকার করেন।
পীরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আমিরুজ্জামান বলেন, ঘটনার বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডিপ্রতিদিন/ ০১ অক্টোবর, ২০১৭/ ইমরান জাহান