পঞ্চগড় সদর উপজেলার শালমারা ভিতরগড় উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিভাবকরা প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। রবিবার দুপুরে বিদ্যালয়ের মাঠে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
অভিভাবকদের দাবি, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ারুল ইসলাম নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের সাথে জড়িত। প্রতিদিন বিকেল ৫টা পর্যন্ত ক্লাস নেয়ার নিয়ম থাকলেও দুপুরের মধ্যেই বিদ্যালয় ছুটি দেয়া হয়। বিদ্যালয়ের একটি কক্ষ ভাড়া দেয়া হয়েছে। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য কোন বিশ্রামাগার নেই। নেই কোন ছাত্রাবাস। বিদ্যালয়ের ১৭ বিঘা জমি রয়েছে। ক্যাম্পাসের বাইরে রয়েছে দুটি পুকুর। এর মধ্যে ৯ বিঘা জমির উপর একটি পুকুর ইজারা দিয়ে তিন লাখ টাকায় আয় করে। কৃষি জমি বন্ধক রেখে প্রতিবছর ৫০ হাজার টাকা আয় হয়। কক্ষ ভাড়া দিয়ে আয় হয় প্রতিমাসে প্রায় তিন হাজার টাকা।
গত কয়েক মাস আগে বিদ্যালয়ের মাঠে লাগানো প্রায় তিন লাখ টাকার গাছ বিক্রি করা হয়। এসব আয়-ব্যয়ের মধ্যে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। অন্যদিকে ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনেও রয়েছে প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম।
বিদ্যালয়টিতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকদের টয়লেট টাইলস দিয়ে নির্মিত হলে ছাত্রীদের কমন রুমে দুর্গন্ধ, শিক্ষার্থীদের টয়লেট এবং শ্রেণীকক্ষগুলোতেও দুর্গন্ধ।
বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, ঠিক মতো ক্লাস হয় না। দুপুর ২টায় বিদ্যালয় ছুটি হয়ে যায়। শ্রেণী কক্ষগুলো অত্যন্ত নোংরা। টয়লেট এবং কমন রুমে দুর্গন্ধের জন্য প্রবেশ করা যায় না।
অভিভাবক ও ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য হাইদুন নবি বলেন, বিদ্যালয়টি নানা অনিয়মে ভরে গেছে । এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভাল ফলাফল করতে পারছে না। প্রাচীন এ বিদ্যালয়টি শিক্ষায় পিছিয়ে যাচ্ছে।
অভিভাবক সমাবেশে সদর উপজেলার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি একরামুল হক বলেন, এসব কথা সাংবাদিকদের জানাবেন না । মিডিয়ায় প্রচার করার দরকার নেই। তাতে বিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে।
সংশ্লিষ্ট অমরখানা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান নুরু বলেন, এসব অভিযোগ অনেকদিন থেকে শুনে আসছি । এই এলাকায় এটি অত্যন্ত প্রাচীন বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়ে দুর্নীতি বা অনিয়ম হোক এটা আমরা চাই না। অচিরেই এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়টির কোন শিক্ষক বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি।প্রধান শিক্ষক আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচন নিয়ে একটি পক্ষ ষড়যন্ত্রমূলক এসব অভিযোগ করছে। এই বিদ্যালয়ে ২টি শূন্য পদে নিয়োগ দেয়া হবে। নিয়োগ বাণিজ্য করার জন্য কিছু লোক কমিটিতে আসতে চায় । তারাই এসব করছে। জেএসসি পরীক্ষার জন্য বিদ্যালয় দুপুরে ছুটি দেয়া হয়। পরিচ্ছন্নতা কর্মী ছুটিতে থাকার কারণে বিদ্যালয় কিছুটা নোংরা হয়েছে। সরকারি বিধিমালা মেনে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি গাছ কাটাসহ আয়-ব্যয় করছে। এতে অনিয়মের কোন কিছু নেই। এর আগে কোন অভিযোগ উঠেনি। এখন নিয়োগ বাণিজ্যর জন্য এসব করছে।
বিডি প্রতিদিন/৫ নভেম্বর, ২০১৭/ফারজানা