নাটোরের বড়াইগ্রামের জোনাইল সেন্ট লুইস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ধর্মপল্লীর সহকারী পাল-পুরোহিত ফাদার ওয়াল্টার উইলিয়াম রোজারিওকে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা বাসস্ট্যান্ড থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজের ৫ দিন পর শুক্রবার বেলা ৩টার দিকে তাকে উদ্ধার করা হয়। ফাদার ওয়াল্টারের বড়ভাই গ্রামীণ ফোনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা অমল রোজারিও জানান, দুপুর ৩টার দিকে অন্য একটি মোবাইল নাম্বার থেকে তার নিখোঁজ হওয়া ভাই ফাদার ওয়াল্টার ফোন করে প্রথমে কান্নাকাটি করে। পরে তিনি কণ্ঠ শুনে জানতে চান সে ছোট ভাই ওয়াল্টার কিনা। এসময় ফাদার ওয়াল্টার জানান, সে অপহরণকারীদের কাছে থেকে পালিয়ে এসে সিলেটের সুরমা বাসস্ট্যান্ডের শ্যামলী কাউন্টারে আশ্রয় নিয়েছে। পরবর্তীতে বড়ভাই অমল রোজারিও শ্যামলী কাউন্টারের মাস্টারকে ফোনে জানায় তার ভাই কিডনাপ হয়েছিলো। তিনি ভাইয়ের নিরাপত্তা চেয়ে দ্রুত পুলিশ হেফাজতে দেয়ার জন্য কাউন্টার মাস্টারকে অনুরোধ করেন। পরবর্তীতে দক্ষিণ সুরমা থানার পুলিশ ফাদার ওয়াল্টারকে নিরাপদ হেফাজতে নিয়ে নেন।
নাটোর গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল হাইকে শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে মুঠোফোনে ফাদার ওয়াল্টার উদ্ধার হওয়ার সংবাদের সত্যতা জানতে চাইলে তিনি এর সত্যতা স্বীকার করেন। এসময় তিনি আরও জানান, ঢাকা থেকে গোয়েন্দা পুলিশের একটি বিশেষ টিম সংবাদ পাওয়া মাত্র সিলেটের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। পাশাপাশি নাটোর থেকে তিনি ও তার নেতৃত্বে বিশেষ টিম সিলেটের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে।
এদিকে ফাদার ওয়াল্টারের উদ্ধারের সংবাদ বিভিন্ন স্যাটেলাইট টেলিভিশনে দেখতে পেয়ে মুহূর্তেই খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে মোবাইল ফোনে বার্তা আদান-প্রদান হয়। সংবাদ শুনে ধর্মপল্লীসহ পরিবারের স্বস্তি নেমে আসে।
বিকেল ৫টার দিকে ফাদার ওয়াল্টারের বনপাড়াস্থ মিশন পাড়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, পরিবারের সকলে টিভির সামনে বসে আছে। এসময় ফাদার ওয়াল্টারের মা পাত্রিশিয়া গমেজ জানান, টিভির খবরে দেখেছি ছেলে উদ্ধার হয়েছে। তবে তিনি ও তার স্বজনেরা জানান, ফাদার ওয়াল্টার তাদের কাছে সুস্থ হয়ে ফিরে এসেছেন এমন দৃশ্য স্বচক্ষে না দেখা পর্যন্ত স্বস্তি পাচ্ছেন না।
বড়াইগ্রাম সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. হারুণ-অর-রশিদ জানান, সিলেট থেকে পুলিশ হেফাজতে ফাদার ওয়াল্টারকে এনে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ফাদার ওয়াল্টার বনপাড়া থেকে জোনাইলে তার কর্মস্থলে ফেরার উদ্দেশ্যে নিজের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলযোগে রওনা দেওয়ার পর তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। সে বনপাড়া পৌর শহরের মিশন পাড়া এলাকার মৃত সিলভেস্টার রোজারিও’র ছেলে।
বিডি প্রতিদিন/১ ডিসেম্বর ২০১৭/হিমেল