হবিগঞ্জের ভাটি অঞ্চলের কয়েকটি হাওরের নিম্নাঞ্চলের বোরো জমিতে জমে রয়েছে বর্ষার পানি । এতে কৃষকরা বোরো ধান চাষাবাদ নিয়ে অনিশ্চতায় পড়েছেন। গত বছরের দু’ দফা অকাল বন্যার পানিতে কৃষকদের বোরো ধান পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল। এ বছর আবার সেই জমিতে বোরো ধান আবাদ করতে না পারায় আশংকায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা।
এখনও পানির নিচে আজমিরীগঞ্জ উপজেলার বদলপুর, জিলুয়া, কাকাইলছেও, মাহতাবপুর, রাহেলা, রসূলপুর, কামালপুর, ঘড়দাইর, বানিয়াচঙ্গ উপজেলার হাফরারবিল, কৈয়ারঢালা, মাতাবপুর, ইকরাম, মাকুর্লী, মাকালকান্দি, মখা, বিথঙ্গল। নবীগঞ্জ উপজেলার গোলডুবা, সাফাতি, সাতবিল। বাহুবলের গুঙ্গাজুড়ি, লাখাই উপজেলা বেগুনাই, তেঘড়িয়াসহ আরো ২৫টি হাওর। হাওরগুলো নিম্নাঞ্চলে পানি জমে থাকায় অধিকাংশ জমি গুলোতে বোরো ধান আবাদ করতে পারছেন না কৃষকরা। নদী গুলোতে পানি প্রবাহ বেশী থাকায় বোরো জমির পানি নামছে না। ফলে দিশেহারা পড়েছেন স্থানীয় কৃষকেরা।
বানিয়াচঙ্গ উপজেলার আতুকুড়া গ্রামের কৃষক নূরুল আমীন জানান, হাফরার হাওরে উপরে জমিগুলোতে ধান রোপন কাজ শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু চলতি বছর শুকনো মৌসুমে বোরো আবাদকালীন সময়ে জমিতে এখনও পানি জমে থাকার কারণে ধান রোপন করা কৃষকদের সম্ভব হচ্ছে না। গত বছর হাফরার হাওরে নিচু জমিগুলো থেকে ধান তুলতে পারেনি। এবারও মনে হয় এসব জমিগুলোতে ধান চাষ করাই সম্ভব হবে না। এ ব্যাপারে কৃষি বিভাগ থেকে আমাদের এলাকার কৃষকরা কোন পরামর্শ পাচ্ছে না। আমরা পানি নিস্কাশনের জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছি।
বানিয়াচঙ্গ-আজমিরীগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মোঃ আব্দুল মজিদ খান জানান, কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠাইমনের শান্তিপুরের চাদরি বিলের পাশে কালনী-কুশিয়ারা নদীতে লোপ কাটিং করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া আমমিরীগঞ্জের কাকাইলছেও, রাহেলা, মাতাবপুরসহ কয়েকটি গ্রামও এ লোপ কাটিংয়ের ভিতরে চলে গেছে এবং হবিগঞ্জের খোয়াই নদীতে বিভিন্ন স্থানে পলি পড়ে উচু হয়ে যাওয়ায় কারণে হাওরের পানি নামতে পারছে না। এ কারণে হাওরগুলো এখন পানি জমে রয়েছে।
তিনি বলেন, স্টেন্ডিং কমিটির সভায় পানি উন্নয়ন বোর্ড, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ও নৌ মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে অচিরেই যোগাযোগ করে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন- এলাকা পরিদর্শন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে বিষয়টি নিতে পারলে এর স্থায়ী সমাধান হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক -মোহাম্মদ আলী জানান, এবার জেলায় ১ লাখ ২০ হাজার হেক্টর আবাদ করার থাকলেও এখন পর্যন্ত ৪০ হাজর হেক্টর আবাদ কার হয়েছে। তবে তিনি কৃষকদের অভিযোগ এড়িয়ে গিয়ে বলেন, পানি সরে যাওয়ার সাথে সাথে জিরো টিলেজে চারা রোপন, ড্রাম সিডার দিয়ে জমিতে বীজ বপন এবং রাইস ট্রান্সপান্টার দিয়ে চারা রোপন করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এছাড়া এলজিইিডি কর্তৃক বিভিন্ন খাল বিলের পাশ দিয়ে সাবমারজিবোল সড়ক তৈরী করার ফলে জমির পানি ধীর গতিতে নামছে।
বিডিপ্রতিদিন/ ০৭ জানুয়ারি, ২০১৮/ ই জাহান