নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদী মধ্যপাড়া এলাকায় নানি-নাতিকে শ্বাসরোধ করে হত্যার ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন এ মামলার গ্রেফতারকৃত আসামি আক্তার হোসেন।
রবিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ আদালতের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন। ভাড়া নেওয়া বাসা ছেড়ে দিতে বলায় ক্ষিপ্ত হয়ে নানি-নাতিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে আক্তার হোসেনসহ তিন ঘাতক। জবানবন্দীর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পুলিশের পরির্দশক (তদন্ত) নজরুল ইসলাম।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পুলিশের পরির্দশক (তদন্ত) নজরুল ইসলাম, শনিবার বিকেলে মিজমিজি আব্দুল আলী পুল হতে নানি-নাতি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আক্তার হোসেনকে গ্রেফতার করে রবিবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়। বিকেলে আক্তার হোসেন ১৬৪ ধারায় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন।
আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তির বর্ণনা দিয়ে তিনি আরও বলেন, নিহত পারভিন আক্তার, তার জামাতা নবী আউয়াল ও নাতি মেহেদী হাসানকে নিয়ে পাইনাদি মধ্যপাড়া এলাকার ইতালি প্রবাসী তোফাজ্জল হোসেনের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। পারভিন আক্তার ওই বাড়ির কেয়াটেকার হিসেবে ছিলেন। ওই বাড়ির মাঝের রুমটি ভাড়া নেন একই এলাকায় আক্তার হোসেনসহ তিন বখাটে। তারা নেশা করে। ওই রুমে ইয়াবা বিক্রি করতো। প্রায়ই তারা ঝামেলা সৃষ্টি করতো। পরে পারভিন আক্তার তাদেরকে বলেন রুমটি অন্য জায়গায় ভাড়া দিয়ে দিবো। এরপর পারভিন আক্তার এক বখাটের মায়ের কাছ থেকে ওই কক্ষটির চাবি নিয়ে আসে। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। এক পর্যায়ে তারা পারভিন আক্তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। ফলে গত ৩০ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে পারভিন আক্তারকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এ ঘটনাটি তার নাতি মেহেদী হাসান দেখে ফেলে ও কান্নাকাটি শুরু করে। পরে তারা মেহেদী হাসানকেও গলাটিপে হত্যা করে কক্ষটি তালা বদ্ধ করে রাখে।
পরির্দশক নজরুল ইসলাম আরও জানান, হত্যাকান্ডেজড়িত আরও দু আসামিকে (তদন্তের স্বার্থে নাম উল্লেখ করতে অপারগতা প্রকাশ করে তদন্তকারী কর্মকর্তা) গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
উল্লেখ্য, ৪ জানুয়ারি নিখোঁজের ৫ দিন পর ওই বাড়ির তালাবদ্ধ রুম থেকে নানি পারভিন আক্তার ও নাতি মেহেদী হাসানের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। নানি-নাতি নিখোঁজের বিষয়ে পারভিন আক্তারের জামাতা নবী আউয়াল এলাকায় মাইকিংও করে। লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ নবী আউয়ালকে সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে নারায়ণগঞ্জ আদালতে প্রেরণ করে। নানি-নাতির লাশ উদ্ধারের ঘটনায় ৪ জানুয়ারি রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাসিরউদ্দিন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
বিডি-প্রতিদিন/০৭ জানুয়ারি, ২০১৮/মাহবুব