গাজীপুরের কালীগঞ্জ থেকে নিখোঁজের ছয়দিন পর কাপাসিয়ায় বনের ভেতর থেকে নিরীহ এক কৃষকের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল (রবিবার) সন্ধ্যায় পুলিশ কাপাসিয়ার কামড়া দক্ষিণপাড়া গহীন গজারি বনের ভেতর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে।
প্রাথমিকভাবে পুলিশ ধারণা করছে, হাত-পা বেধে শ্বাসরোধে হত্যার পর ওই কৃষকের পুরুষাঙ্গ ও অণ্ডকোষ কেটে নিয়ে গেছে খুনিরা। হত্যাকাণ্ডটি আরো দুই থেকে তিন দিন আগে ঘটলেও গতকাল বিকেলে মরদেহ দেখে গ্রামবাসী পুলিশকে জানায়।
নিহতের নাম জহিরুল ইসলাম (৪০)। তিনি পাশের কালীগঞ্জ উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের ভিটিবাগুন গ্রামের আবদুল মান্নানের ছেলে। জহিরুল একজন কৃষক ছিলেন।
স্বজনরা জানায়, ৫ বছরের কন্যা জেরিন পুতুল কিনে দিতে বায়না ধরেছিলো বাবা জহিরুলের কাছে। মেয়ের বায়না পূরণ করতে এলাকার বাজারে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বাজার থেকে আর ফিরে আসেননি জহিরুল। ওইদিন রাতে বাড়ি না ফেরায় ব্যাপক খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর কোনো হদিস পাননি তারা। ঘটনাটি গত বৃহস্পতিবার কালীগঞ্জ থানায় জানালেও কোনো সাধারণ ডায়েরি করেননি।
জহিরুলের লাশ দেখে তার স্ত্রী বারবার বলছে, মেয়েটি পুতুল কিনতে বলেছিল। পুতুল কিনতে গিয়ে এখন লাশ হয়ে ফিরলো।
কাপাসিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোখলেসুর রহমান জানান, গতকাল বিকেলে এক নারী লাকড়ি কুড়াতে গিয়ে বনের ভেতর অর্ধগলিত মরদেহ দেখে গ্রামবাসীকে জানান। ঘটনা জেনে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে। উদ্ধারের পর গতকাল সন্ধ্যায় মরদেহটি জহিরুল ইসলামের বলে শনাক্ত করেছেন তাঁর স্বজনরা।
ওই এসআই আরো জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, দুর্বৃত্তদল শ্বাসরোধে হত্যার পর জহিরুলের পুরুষাঙ্গ ও অণ্ডকোষ কেটে নিযে যায়। হত্যাকাণ্ডটি আরো দুই থেকে তিনদিন আগে ঘটে থাকতে পারে।
নিহতের বড় ভাই মাদরাসা শিক্ষক আবদুস সামাদ জানান, তাঁর ছোট ভাই জহিরুল ছিলেন খুবই নিরীহ। তাঁর কোনো শত্রু ছিলনা। এক কন্যা শিশুর জনক জহিরুল ইসলাম, তাঁর স্ত্রী ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
এসআই মোখলেসুর রহমান বলেন, ‘গতকাল রাতে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।’ তবে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গতকাল রাত সাড়ে ১১টায়ও মামলা হয়নি।
বিডি প্রতিদিন/৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/হিমেল