কিশোরগঞ্জে ভূমি অধিগ্রহণের পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় আজ জেলা হিসাব রক্ষণ কার্যালয়ের দুই কর্মচারীকে আটক করেছে দুদক। নিজ কার্যালয়ে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল ওয়াদুদ ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান তাদেরকে আটক করেন।
তারা হলেন জুনিয়র অডিটর মো. সৈয়দুজ্জামান ও অফিস সহায়ক মো. দুলাল মিয়া। পরে তাদেরকে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করলে বিচারক আব্দুছ ছালাম খান তাদেরকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। টাকা আত্মসাতের সাথে তাদের জড়িত থাকার বিষয় নিশ্চিত হয়েই তাদেরকে আটক করা হয়েছে বলে দুদকের একটি সূত্র জানায়।
এর আগে গত শুক্রবার সাবেক জেলা ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা মো. সেতাফুল ইসলাম পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। জবানবন্দিতে সেতাফুল ইসলাম টাকা আত্মসাতের ঘটনায় জড়িত হিসেবে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. আজিমুদ্দিন বিশ্বাস, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) দুলাল চন্দ্র স‚ত্রধরসহ আরো কয়েকজন কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করেন বলে জানা গেছে।
কিশোরগঞ্জ জেলার সাবেক ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা (এলএও) সেতাফুল ইসলামকে গত ১৭ জানুয়ারি পিরোজপুর জেলা সদর থেকে গ্রেপ্তার করে দুর্নীতি দমন কমিশন। ঐদিনই দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ময়মনসিংহ অঞ্চলের সহকারী পরিচালক রাম প্রসাদ মন্ডল বাদী হয়ে সেতাফুলকে একমাত্র আসামি করে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় সেতাফুলের বিরুদ্ধে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে সরকারের পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। কিশোরগঞ্জ থেকে বদলীর পর তিনি একই পদে পিরোজপুর জেলায় দায়িত্বরত ছিলেন। পরে ২৯ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জের মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে হাজির করে তদন্তকারী কর্মকর্তা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমাণ্ডের আবেদন করলে বিচারক আ. ছালাম খান সেতাফুল ইসলামের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আদালতের আদেশের পরই সেতাফুলকে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) নিজেদের হেফাজতে নেয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছাড়াও দুদকের উচ্চ পর্যায়ের দল সেতাফুল ইসলামকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞসাবাদের চারদিনের মাথায় সেতাফুল ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জন্য কিশোরগঞ্জে কয়েকশ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়। এসব ভূমির মালিককে ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়ার সময় জালিয়াতির আশ্রয় নেন ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা সেতাফুল ইসলাম। জেলার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কাজে ভ‚মি অধিগ্রহণের জন্য বরাদ্দ করা তহবিল থেকে চেকের মধ্যে সেতাফুল ইসলাম পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাত করেন। এছাড়া ঘটনা জানতে পেরে শেষ মুহূর্তে আত্মসাতের প্রক্রিয়ায় থাকা আরো ৯ কোটি টাকার চেক জব্দ করে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসন।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার