ফাল্গুনের শুরু থেকে দিনাজপুরের লিচু গাছগুলোতে মুকুলের মৌ মৌ গন্ধ। কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারও লিচুর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা। দেশের সেরা দিনাজপুরের লিচু। মিষ্টি ও রসালো স্বাদ আর বৈশিষ্ট্যের দিক দিয়ে বিভিন্ন জাতের মধ্যে বেদানা, বোম্বাই, মাদ্রাজি, চায়না-থ্রি আর দেশি লিচু গাছের ডালপালা মুকুলে মুকুলে ছেয়ে গেছে।
দিনাজপুর সদরের মাসিমপুর, কসবা, বাশেরহাট, পুলহাট, বিরল, পাচবাড়িসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় লিচু গাছের ডালে ডালে প্রচুর মুকুল এসেছে। জেলা সদরসহ কাহারোল, বিরল, চিরিরবন্দর, বীরগঞ্জ প্রভৃতি উপজেলায় এই ফলের চাষাবাদ প্রতিনিয়তই বাড়ছেই। শতকরা ৬০ ভাগ গাছে মুকুল এসে গেছে।
লিচু গাছে মুকুল দেখে মালিকরা আশাবাদী, বাগান বিক্রি করে এবারও লাভবান হবেন। বৈশাখ মাসে লিচু পাকা শুরু হয় এবং বাজারে পাওয়া যাবে। এরই মধ্যে লিচু বাগান বেচা-কেনা শুরু হয়ে গেছে। লিচু বাগান নিয়ে এ ব্যবসা চলবে ৪ মাস।
লিচুর ফলন এবং দাম ভাল পাওয়ায় দিনাজপুরে লিচু চাষের জমির দিন দিন বাড়ছেই। গত মৌসুমে দিনাজপুরে এটা বৃদ্ধি পেয়ে দাড়িয়েছে ৪ হাজার ৭৭০ হেক্টর।
সদরের পুলহাট-মাসিমপুরের মোসাদ্দেক হোসেন জানান, দিনাজপুরের দক্ষিণ কোতয়ালী ও মাসিমপুরসহ আশেপাশে কিছু এলাকায় ভিটা, জমি, বসতবাড়ি এবং ডাঙ্গা জমিতে লাগানো গাছই ছিল, লিচু আবাদ ছিল সীমিত। কিন্তু এখন এর বিস্তৃতি ব্যাপক।
বিরলের সফিকুল ইসলাম জানান, একটি বড় গাছে ২০ থেকে ২৫ হাজার পর্যন্ত এবং সবচেয়ে ছোট গাছে ১ থেকে দেড় হাজার লিচু পাওয়া যাবে।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়, দিনাজপুর জেলায় ৪৭৭০ হেক্টর জমিতে ছোট-বড় নিয়ে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার লিচুর বাগান রয়েছে। বাগান ছাড়াও কিছু সংখ্যক বাড়ি, বাড়ি সংলগ্ন ভিটা জমিতে ২/৪টি করে লিচু গাছ রয়েছে বলে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়। এক দশক যাবৎ অবিশ্বাস্য গতিতে বৃহত্তর দিনাজপুরের বিভিন্ন উপজেলায় লিচুর চাষাবাদ বাড়ছেই।
বিডি প্রতিদিন/২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮/ফারজানা