জিজ্ঞাসাবাদে দুই যুবলীগ নেতা হত্যা মামলার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা। গোয়েন্দা পুলিশ এ তথ্য জানিয়েছে।
গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে এনে গত শনিবার দুপুর থেকে টাঙ্গাইল পুলিশ অফিসে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। দুইদিনের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আজ সোমবার তাকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে আদালত তাকে ফের কাশিমপুর কারাগারে পাঠানোর নিদেশ দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, জিজ্ঞাসাবাদে এমপি রানা যুবলীগ নেতা শামীম ও মামুন হত্যা মামলায় জড়িত থাকার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। সে তথ্যগুলো যাচাই বাছাই করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
পুলিশ সূত্র জানায়, এমপি রানাকে শনিবার দুপুর থেকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। রবিবার ভোর চারটা পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ চলে। কয়েক ঘণ্টা বিরতি দিয়ে রবিবার সকালে আবার জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়।
দুই যুবলীগ নেতা হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অশোক কুমার সিংহ জানান, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আজ সোমবার এমপি রানাকে আদালতে হাজির করা হয়।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বাঘিল ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা শামীম ও মামুন হত্যা মামলায় গত বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইল সদর আমলী আদালতের বিচারক আব্দুল্লাহ আল মাসুম রানার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এমপি রানা আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার প্রধান আসামি। ২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর আদালতে আত্মসমর্পণের পর থেকে তিনি কারাগারে আছেন।
এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশোক কুমার সিংহ রানাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচদিনের রিমান্ড চেয়ে গত ২ মে আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয় দুই যুবলীগ নেতা হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত তিন আসামির জবানবন্দিতে এমপি আমানুর রহমান খান রানার জড়িত থাকার বিষয়টি বের হয়ে এসেছে। তাই এ ব্যাপারে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বাঘিল ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা শামীম ও মামুন ২০১২ সালের ১৬ জুলাই তাদের বাড়ি থেকে মোটর সাইকেলযোগে টাঙ্গাইল শহরে এসে নিখোঁজ হন। ঘটনার পরদিন শামীমের মা আছিয়া খাতুন এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এক বছর পর ২০১৩ সালের ৯ জুলাই নিখোঁজ মামুনের বাবা টাঙ্গাইল আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে তদন্ত করে পুলিশ ওই বছর ২১ সেপ্টেম্বর মামলাটি তালিকাভূক্ত করে। এই মামলায় গ্রেফতার হওয়া শহরের বিশ্বাস বেতকা এলাকার খন্দকার জাহিদ গত বছর ১১ মার্চ, শাহাদত হোসেন ১৬ মার্চ এবং হিরন মিয়া ২৭ এপ্রিল আদালতে এই ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তারা উল্লেখ করেন এমপি রানার দিক দির্দেশনায় যুবলীগ নেতা শামীম ও মামুনকে হত্যা করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হয়েছিল।
বিডি প্রতিদিন/১৪ মে, ২০১৮/ফারজানা