ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ফুরসন্দি ইউনিয়নের দিঘিরপাড় গ্রামের ৬৫ বছরের বৃদ্ধের ধর্ষণের শিকার হয়ে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরী ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে। বৃদ্ধর পরিবার প্রভাবশালী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে গ্রামের কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। পরে হতদরিদ্র মেয়েটির মা মাগুরা আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার অভিযোগ ও গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, চার সন্তানের জনক তফসের মোল্লার বয়স ৬৫ বছরে পড়েছে। স্ত্রী ১২ বছর আগে মারা গেছে। স্ত্রী মারা যাওয়ার পর থেকেই গ্রামের বিভিন্ন বয়সী নারীদের উত্যক্ত করে আসছিলেন। কিন্তু গ্রামের লোকজন বয়স্ক মানুষ বলে কেউ তার কথায় প্রতিবাদ করেন না। বৃদ্ধ তফসের মোল্লার বাড়ির পাশে দহখোলা মাদ্রাসা। মাদ্রাসার ছাত্রীদেরকেও তিনি বিভিন্নভাবে উত্যক্ত করেন। ছাত্রীরাও বৃদ্ধকে বিভিন্নভাবে এড়িয়ে চলেন। এরমধ্যে লম্পট বৃদ্ধর নজরে পড়েন স্বামী পরিত্যক্ততা দিঘিরপাড়া গ্রামের গার্মেন্টস কর্মীর ১৪ বছর বয়সী কন্যা। মা ঢাকায় গার্মেন্টসের কাজ করার সুবাদে কিশোরী মেয়ে ও তার ছোট বোন প্রতিবন্ধী নানা-নানির কাছে থাকেন।
কিশোরী মেয়েটির গ্রামের বান্ধবী রিবা খাতুন। তাদের বাড়িতে মেয়েটি আসা-যাওয়া ছিল। সচতুর বৃদ্ধ এরমধ্যে একই গ্রামের পাতা মোল্লার স্ত্রী কমলা ও তার মেয়ে (বান্ধবী) রিবাকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে ফেলে। বান্ধবী রেবাকে দিয়ে গত ২ জানুয়ারি বাড়িতে ডেকে এনে বৃদ্ধর হাতে তুলে দিয়ে ঘরে শিকল আটকিয়ে দেয়। বৃদ্ধ তাদের ঘরের মধ্যে কিশোরীকে ধর্ষণ করে। বৃদ্ধ তফসের ও পাতা মোল্লার স্ত্রী কমলা খাতুন বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য কিশোরীকে হুমকি দেন। এমনকি ধর্ষণের শিকার কিশোরী ছোট বোনকে হত্যার হুমকি দেন। লোকলজ্জায় ও ভয়ে কিশোরী কাউকে কিছু বলেনি। সম্প্রতি মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পড়লে বিষয়টি তার নানীকে জানান। পরে নানী ডাক্তারকে দেখালে মেয়েটি ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বলে জানা যায়। ঘটনাটি জানার পর হতদরিদ্র পরিবারটি দিশেহারা ও বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। ঘটনা শুনে মেয়ের মা ঢাকা থেকে ফিরে এসে গ্রামের লোকজনের জানালেও তারা কোন ব্যবস্থা নেয়নি। ভিকটিমের বাড়ি মাগুরা সন্ধ্যা-লক্ষীপর হওয়ায় তার মা বাদী হয়ে মাগুরা আদালতে বৃদ্ধ তফসের মোল্লা, একই গ্রামের পাতা মোল্লার স্ত্রী কমলা ও তাদের মেয়ে রিবাকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
এ ব্যাপারে ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আলিম উদ্দিন জানান, কিশোরীর আগত সন্তানের কথা চিন্তা করে বৃদ্ধর সাথে বিয়ে বিকল্প ভাবতে পারছি না। তবে তারা ভাবছে কোন প্রকারে টাকা পয়সা দিয়ে মিটান যায় কিনা।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই বদিউর রহমান জানান, ঘটনার সত্যতা মিলছে। আমি আসামিদের গ্রেফতারের জন্য চেষ্টা করছি। গ্রেফতারের পর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/১০ জুলাই ২০১৮/হিমেল