টানা বৃষ্টি আর উজানের ঢলে বন্যার পানি নাগর নদী ভরে উঠায় বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার ভাটরা ও থালতা মাজগ্রাম ইউনিয়নের শতাধিক পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। চারদিকে পানি থৈ থৈ করছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে দুই হাজার মানুষ। এছাড়া ভাটরা ইউনিয়নের নাগরকন্দি থেকে বৃষ্ণপুর, কালিয়াগাড়ী থেকে চাতরাগাড়ী, উমাপতিদীঘি, পার-নাগরকান্দি রাস্তা ডুবে গেছে, বাড়িতে পানি প্রবেশ করছে।
ভেসে গেছে পুকুরের মাছ, পানির নিচে আমন ধান, সবজির খেত, বীজতলা। এদিকে ভাটগ্রাম ও বুড়ইল ইউনিয়নের ফসলের মাঠ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় এবার ১৯ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে আন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। অষাঢ় মাসে বৃষ্টি হয়নি। একারণে অনেক কৃষক সেচপাম্প চালু করে খেতে আমনের চারা রোপণ করেন। ইতিমধ্যে ৮০ শতাংশে আমনের চারা রোপণ শেষ হয়েছে। কিন্তু চারা রোপনের পর কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে উপজেলার মাঠঘাট থৈ থৈ। ডুবে গেছে আমনের চারা ও বীজতলা।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার নাগর নদ দিয়ে ও দৈয়নার খাল ধ্বসে ফসলের মাঠ ও গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে উপজেলার দমদমা, চাতরাগাড়ি, নাগরকান্দি, কালিয়াগাড়ী, রুস্তমপুর, মূলকুড়ি, পার-নাগরকান্দি, মাধবকুড়িসহ বিভিন্ন মাঠের আমন ধান ডুবে গেছে। দিন দিন পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দুটি ইউনিয়নের ২৫ গ্রামের মাঠের আমন ধান, বীজতলা, রাস্তা, শতাধিক পুকুর ডুবে গেছে। গবাদি পশু নিয়েও বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। অন্যদিকে বগুড়া-নাটোর মহাসড়কের দুই পাশে নালা ও খাল ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ এবং বেখল হওয়ায় দ্রুত পানি নিস্কাাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে।
নন্দীগ্রামের ভাটরা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান মাছুম বলেন, এই ওয়ার্ডের অধিকাংশ রাস্তা ডুবে গেছে, বাড়িতে পানি প্রবেশ করছে। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। পনির নিচে আমন ধান ও বীজতলা। প্রায় দুই হাজার মানুষ পানিবন্দি।
দমদমা গ্রামের পানিবন্দি নাসরিন বেগম জানান, এখন বাড়ি ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। আমরা আতঙ্কে রয়েছি। আমাদের কেউ কোন খোঁজখবর নেয় না।
উপজেলা কৃষি অফিসার মুহা. মশিদুল হক জানান, গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে উপজেলায় জলাবদ্ধতায় সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রায় ২৫০ হেক্টর জমির আমন চারা তলিয়ে গেছে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার