বাস-ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন ভাংচুর ও রাস্তায় শ্রমিকদের নিরাপত্তার দাবিতে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনেও অচল সিরাজগঞ্জ। সকাল থেকে ঢাকা ও আভ্যন্তরীণ সকল রুটে বাস-ট্রাক-সিএনজি-মাইক্রোবাস বন্ধ রয়েছে। এতে যাত্রীরা চরম বিপাকে পড়েছে। পাশাপাশি পরিবহন বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীরাও চরম বিপাকে পড়েছে।
ঢাকায় বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় ছাত্রদের সাতদফা দাবীতে আন্দোলন বৃহস্পতিবার সিরাজগঞ্জে ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষুদ্ধ ছাত্ররা ১৫-১৬টি যানবাহন ভাংচুর করে। এ সময় ছাত্র-শ্রমিকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এঘটনার পর রাতে পরিবহন মালিক-শ্রমিক বৈঠক করে তাদের নিরাপত্তার দাবীতে সিরাজগঞ্জে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট ডাকে।
এদিকে, সিরাজগঞ্জে ছাত্র-ছাত্রীরা যেন স্কুল ছেড়ে রাস্তায় বের হতে না পারে সে জন্য স্কুলে শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের নিয়ে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে জরুরী বৈঠক করা হয়েছে। বৈঠকে জেলা প্রশাসক কামরুন্নাহার সিদ্দিকা শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের ছাত্র-অভিভাবকদের সুপরামর্শ ও সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
অন্যদিকে, পরিবহন শ্রমিকরা সকাল থেকেই বিভিন্ন রাস্তায় অবস্থান নিয়ে অটোরিক্সা থেকেও যাত্রীদের নামিয়ে দিতে দেখা গেছে।
সাধারণ যাত্রী ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকার যেহেতু ছাত্রদের দাবী মেনে নিয়েছে সে জন্য ছাত্রদের আন্দোলন বন্ধ এবং পরিবহন চালকদের সতর্কতার সাথে গাড়ি চালানোর দাবী জানিয়েছেন সাধারন মানুষ।
অন্যদিকে, সকল পরিবহন বন্ধ থাকায় রিক্সা ভাড়াও দিগুন গুণতে হচ্ছে যাত্রীদের।
সিরাজগঞ্জ জেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সুলতান জানান, রাস্তায় চালকদের কোন নিরাপত্তা নেই। চালকরা সব সময় নানাভাবে রাস্তায় নির্যাতিত হয়। ছাত্র আন্দোলনের নামে সিরাজগঞ্জে ১৫টি বাস-ট্রাক-সিএনজি মাইক্রোবাস ভাংচুর করা হয়। এতে শ্রমিকরা নিরাত্তাহীনতায় রয়েছেন। একারণে চালকরা গাড়ীর চাবি মালিকদের কাছে হস্তান্তর করে অনির্দিষ্টকালের জন্য যানবাহন বন্ধ করে দিয়েছে। এছাড়াও সরকার শিক্ষার্থীদের দাবীর প্রেক্ষিতে যে আইন করতে যাচ্ছে তা শ্রমিকদের জন্য অকল্যাণ হবে। এ অবস্থায় সুষ্ঠ সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে বলেও তিনি জানান।
জেলা প্রশাসক কামরুন্নাহার সিদ্দিকা জানান, শিক্ষক-ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের সাথে মতবিনিময় করা হয়েছে। প্রত্যেক স্কুলের শিক্ষকদের সতর্কবস্থায় থাকার নির্দেশের পাশাপাশি ছাত্র-অভিভাবকদের সাথে পরামর্শ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে-যাতে ছাত্ররা ক্লাস ছেড়ে রাস্তায় বের না হয়।
বিডি-প্রতিদিন/ ই-জাহান