বাগেরহাটের শরণখোলায় বিদ্যুৎ গ্রাহকদের কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাতে লাখ লাখ টাকা আদায়, অতিরিক্ত বিল করা, বিল পরিশোধে বিড়ম্বনা ও গ্রাহক হয়রানি করে চলেছে পিরোজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। দীর্ঘদিন ধরে চলছে এমন অব্যবস্থাপনা। এতে সরকারের ভাবমূর্তিও ক্ষুন্ন হচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে গ্রাহকরা এসব অনিয়মের অভিযোগ করলেও কোনো প্রতিকার হয়নি। অবশেষে আওয়ামী লীগ ও একটি নাগরিক সংগঠন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এসব দুর্নীতি, অনিয়মের বন্ধের প্রতিবাদে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে আজ মঙ্গলবার দুপুরে শরণখোলা প্রেসক্লাবে পৃথকভাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে।
শরণখোলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির বাবুল ও সচেতন নাগরিক সমাজের আহবায়ক মো. শহীদুল ইসলাম পৃথক সাংবাদ সম্মেলনে তাদের লিখিত অভিযোগে জানান, পিরোজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি উপজেলার ১৫ হাজার গ্রাহকের সাথে বছরের পর বছর ধরে প্রতারণ করে আসছে। তারা নির্ধারিত বিলের সাথে অতিরিক্ত বিলের পাশাপাশি, সার্ভিস চার্জ, ডিমান্ড চার্জ, মিটার ভাড়া, মনগড়া বিদ্যুৎ বিল তৈরী ও সর্বোপরী বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার নামে স্থানীয় দালাল চক্রের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে বিল পরিশোধের জন্য সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংক নির্ধারিত থাকলেও সমিতির অব্যবস্থাপনার কারণে ব্যাংক দুটি বিল নেওয়া বন্ধ করে দেয়। এতে গ্রাহকদের আরো ঝামেলায় পড়তে হয়। পরবের্তীতে গত মাসখানেক ধরে একটি এজেন্ট ব্যাংকের মাধ্যেমে বিদ্যুৎ বিল নেয়া শুরু করে পিরোজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। এক্ষেত্রে গ্রাহকরা আবারও নতুন করে প্রতারণার শিকার হন। ওই এজেন্ট ব্যাংকের সাথে সর্বনিম্ন ৬০০ টাকা বিলের ক্ষেত্রে ৫ টাকা, ৬০০ থেকে ১৫০০ টাকা বিলের ক্ষেত্রে ১০টাকা এবং এর থেকে অধিক বিলের ক্ষেত্রে ১২টাকা গ্রাহকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত আদায় করছে পিরোজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।
এমনকি, সমিতির নিযুক্ত দালাল চক্রের মাধ্য লাখ লাখ টাকা দেওয়া হলেও বছর বছর ঘুরেও বিদ্যুৎ সংযোগ পাচ্ছে না বহু গ্রাহক। তাছাড়া, শরণখোলা ও মোরেলগঞ্জ এ দুটি উপজেলা বাগেরহাট জেলার আওতাভূক্ত হলেও পল্লী বিদ্যুতের আঞ্চলিক কার্যালয় পিরোজপুর জেলায় হওয়ায় দুই উপজেলার প্রায় ৫০ হাজার গ্রাহক আরো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ও দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
আগামী ১৪ আগষ্টের মধ্যে এসব সমস্যার সমাধান না হলে গ্রাহকরা তাদের বিদ্যুত বিল দেয়া বন্ধ করাসহ পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
সাংবাদ সম্মেলনে রায়েন্দা বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা হেমায়েত উদ্দিন বাদশা, ইউপি সদস্য জালাল আহমেদ রুমিসহ আওয়ামী লীগ ও নাগরিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যপারে জানতে চাইলে পিরোজপুর পল্লী বিদ্যুত সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) প্রকৌশলী শংকর কুমার কর বলেন, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্পের আওতায় ওই প্রকল্পের কর্মকর্তা, বাংলাদেশের প্রায় সব ব্যাংকের কর্মকর্তা এবং আরইবি’র ত্রিপক্ষীয় চুক্তির আওতায় এজেন্ট ব্যাংকিয়ের মাধ্যমে বিদ্যুত বিল নেয়া হচ্ছে। অন্যান্য অভিযোগ তিনি অস্বীকার করে বলেন কারো কোন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার