নেত্রকোনায় দ্বিতীয় স্ত্রী শাহানা খাতুনকে (২২) হত্যার দায়ে স্বামী মামুদ আলীকে (৩৫) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। নেত্রকোনার জেলা ও দায়রা জজ কে এম রাশেদুজ্জামান রাজা আজ সোমবার দুপুরে আসামির অনুপস্থিতিতে এ রায় প্রদান করেন।
আদালত সূত্রে মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে প্রকাশ, নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা উপজেলার আসমা ইউনিয়নের ছোট কৈলাটী গ্রামের মৃত মোফাজ্জল খাঁ ছেলে মামুদ আলী সাধুয়ারকান্দা গ্রামের জালাল উদ্দিনের মেয়ে শাহানা খাতুনের সাথে প্রেম করে এক বছর আগে বিয়ে করে। বিয়ের পর সে জানতে পারে তার আরেকটি স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ ও সংসারে অশান্তি দেখা হয়। স্বামী ও আগের স্ত্রীর অত্যাচার নির্যাতন সইতে না পেরে এক পর্যায়ে শাহানা স্বামীর বাড়ি ছেড়ে বাপের বাড়িতে চলে যায় । বিগত ২০১১ সালের ২৫ মে মামুদ আলী শাহানাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে তার বাড়িতে নিয়ে আসে। ওদিন রাতেই পাষন্ড স্বামী তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে বুকে পেটে আঘাত করতে করতে নৃশংসভাবে হত্যা করে।
পরদিন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ফোন করে নিহতের বড় ভাইকে বিষয়টি জানায়। তিনি তাৎক্ষণিক বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হামপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন।
এ ব্যাপারে মৃতকের বড় ভাই মো. মামুন মীর (২৮) বাদী হয়ে স্বামী মামুদ আলী (৩৫), প্রথম স্ত্রী সুফিয়া (২৪), মা তারাবানু (৫০), মামুদের আগের শ্বশুড় সুরুজ আলী (৫৫), চাচা শ্বশুড় জালাল (৪৫), জালালের স্ত্রী সামছুন্নাহার (৩০) ও সুরুজ আলীর পুত্র জব্বারকে (২৬) আসামি করে ২৬ মে বারহাট্টা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে আসামী মামুদ আলী, প্রথম স্ত্রী সুফিয়া ও মা তারাবানুর বিরুদ্ধে একই বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর আদালতে চার্জশীট দাখিল করে। বিচারক মামলার ৭ জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহনান্তে এবং আদালতে উপস্থাপিত কাগজপত্র পর্যালোচনা করে আসামি মামুদ আলীর বিরুদ্ধে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় উপরোক্ত রায় প্রদান করেন। মামলার অপর দুই আসামি সুফিয়া ও তারাবানু’র বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার