সরকারের শাসকগোষ্ঠীরা পাহাড়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের জন্ম দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি ও আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা।
শনিবার দুপুর ১টায় রাঙামাটি শিল্পকলা একাডেমী মিলানায়তনে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির রাঙামাটি জেলা কমিটির উদ্যোগে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৩৫তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ অভিযোগ করেন তিনি।
সন্তু লারমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের পর জনসংহতি সমিতিকে ধ্বংস করতে শাসকগোষ্ঠী জন্ম দেয় ইউপিডিএফ ও জনসংহতি সমিতি এমএন লারমা নামে সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন। আবার জেএসএসের দিকে তীর নিক্ষেপ করে বিভিন্ন সভা, সমাবেশে পাহাড়ে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী বন্ধ করা, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করার কথা বলে তাদেরই বিশেষ মহল। আর পাহাড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার নামে পাহাড়ের জুম্মজাতিদের উপর চালানো হচ্ছে নির্যাতন। এসব করা হচ্ছে শুধু পাহাড়ে জুম্মজনগণের অস্তিত্ব বিলিন করতে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতির রাঙামাটি জেলা শাখার সহ-সভাপতি কিশোর কুমার চাকমার সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন, রাঙামাটি সংসদ সদস্য ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতির সহ-সভাপতি ঊষাতন তালুকদার, পার্বত্য চট্টগ্রাম আদিবাসী ফোরামের সভাপতি প্রকৃত রঞ্জন চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য গৌতম চাকমা ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরূপা দেওয়ান প্রমুখ।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি ও আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা আরও বলেন, সরকার ২১ বছরেও পার্বত্য চুক্তির বাস্তবায়ন না করে পাহাড়ের জুম্ম জাতিগোষ্ঠীদের নিরাপত্তাহীন জীবন সৃষ্টি করে দিয়েছে। অথচ জনসংহতি সমিতি পাহাড়ে শান্তি ফিরে আনতে শান্তি চুক্তি করেছিল। কিন্তু সে চুক্তি সরকার বাস্তাবায়ন করেনি। তাই পার্বত্যাঞ্চলের জুম্মজাতিরা অনিশ্চিয়তার মধ্যে বেঁচে আছে।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কুচক্রী মহল ও শাসকগোষ্ঠীরা এমএন লারমাকে হত্যা করেও তাদের উদ্দেশ্যপূরণ করতে পারেনি। তাই তাদের ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। পার্বত্যাঞ্চলে জুম্মজনগণকে তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে আরও ত্যাগী, সংগ্রামী ও উজীবিত হওয়ার আহ্বান জানান।
এ আগে, সন্তু লারমার বড় ভাই মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির রাঙামাটি জেলা কমিটির উদ্যোগে রাঙামাটিতে প্রভাত ফেরি, এমএন লারমারা অস্থায়ী শহীদ বেদীতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও ফানুস উড়ানো কর্মসূচি পালন করা হয়।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম