দীর্ঘ দিন ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। যশোরের শার্শা উপজেলার উলাশি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ভবনে এ পাঠদান চলছে। যে কোন মুহূর্তে পরিত্যক্ত ভবন ধসে ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। এ আতঙ্কে দিন কাটছে শিক্ষক-অভিভাবকদের।
১৯৪২ সালে উলাশি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপিত হওয়ার সময় বর্তমান পরিত্যক্ত ভবনটি নির্মিত হয়। উপজেলার উলাশী ইউনিয়নের স্বনামধন্য এই বিদ্যাপিঠের পুরাতন ভবনটি ২০১২ সালে উপজেলার শিক্ষা অফিস কর্তৃপক্ষ পরিত্যক্ত ঘোষণা করার পর আজও নতুন কোন বিকল্প ভবনের মুখ দেখেনি সেখানকার শিক্ষার্থীরা। ফলে বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কোমলমতি শিশু-শিক্ষার্থীদের সেই পরিত্যক্ত ভবনে ক্লাস করতে হয় ঝড়-বৃষ্টি মধ্যে। আর পরিত্যক্ত ভবনে জায়গার সংকুলান না হওয়ায় স্কুল মাঠের গাছ তলায় জরাজীর্ন টিনশেডের নীচে ঠাঁই হয়েছে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের। অন্য দুইটি ভবনের চারটি কক্ষের একটি অফিস কক্ষ এবং তিনটি চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুম।
এ বিষয়ে উলাশি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান জানান, এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১১ জন শিক্ষক এবং প্রায় ৫০০ শিক্ষার্থী আছে। এ জন্য ১০টি শ্রেণিকক্ষের প্রয়োজন, কিন্তু আছে মাত্র তিনটি। শ্রেণিকক্ষের অভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পরিত্যক্ত ভবনে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করতে হচ্ছে দীর্ঘ ৬ বছর ধরে। যে কোন মুহূর্তে পরিত্যক্ত ভবন ধসে ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। বারবার ভবনের জন্য তাগিদ দেওয়া সত্বেও শিক্ষা অফিস থেকে আশ্বাস পাওয়া গেলেও ৬ বছরে ভবনের মুখ দেখা মেলেনি। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতি বছর মেধা তালিকায় মেধাবী শিক্ষার্থীরা স্থান করে নেয়। এমন প্রতিকুল পরিবেশ থাকা সত্বেও ২০১৭ সালে চারজন শিক্ষার্থী ট্যালেন্টপুলে মেধা তালিকায় নাম লিখিয়েছিল।
শার্শা উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার রফিকুল ইসলাম জানান, দীর্ঘ দিন ধরে উপজেলার উলাশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করতে হচ্ছে, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয়। প্রতিবছর এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নতুন ভবনের জন্য উর্ধ্বতন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট পরিত্যক্ত ভবনের ছবিসহ বারবার আবেদন করার পরও কেন নতুন ভবনের বরাদ্দ আসছে না তা আমাদের বোধগম্য নয়।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল