ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী ভূবনকুড়া ইউনিয়নের ৫টি গ্রামে সপ্তাহ খানেক ধরে তাণ্ডব চালাচ্ছে বন্যহাতির দল। গাছপালা বিনষ্ট, বীজতলা সহ ফসলের ক্ষতি করে চলছে এসব হাতি দল। হাতির আতঙ্কে রাত কাটাচ্ছে ধোপাঝুড়ি, বানাই চিরিঙ্গাপাড়া, কোচপাড়া ও রঙ্গমপাড়া এলাকায় বসবাসরত সহস্রাধিক পরিবার।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দিনের বেলায় হাতির পাল পাহাড়ের উঁচু টিলায় অবস্থান করলেও সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসলেই দল বেধে প্রায় ২০-৩০টি বন্যহাতির পাল খাবারের সন্ধানে চলে আসে লোকালয়ে। জানমাল রক্ষার জন্য টর্চলাইট, মশাল, পটকা ও বাঁশি নিয়ে রাত জেগে পাহারা দিতে হয় গ্রামের মানুষকে।
সীমান্ত সংলগ্ন ধোপাঝুড়ি গ্রামের সুজিন স্ক্রু জানান, একদল হাতি গত কয়েক দিন ধরে ফসল নির্বিচারে বিনষ্ট করে চলেছে। গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থাকতে হয়। অনেক চেষ্টা করে হাতি তাড়াই। তবে এখন পর্যন্ত কোনো জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
এনজিও কর্মী প্রজিনা রেমা বলেন, আমাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। বন্যহাতির ভয়ে রাতে ঘুমাতে পারি না। কখন যে ঘর-বাড়ি ভেঙে তছনছ করে দেয় সব সময় সে আতঙ্ক বিরাজ করে। বন্যহাতি এখন আর আগের মতো ডাক-চিৎকারে ভয় পায় না। একমাত্র আলো দেখলে ভয় পায়।
তিনি আরো বলেন, ২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে হাতির গুড়িয়ে দেওয়া মাটি চাপায় প্রতিবেশী আল্পনা চিরান ও তার
মেয়ের মৃত্যু হয়। লোকালয়ে হাতির আগমণে সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থানে থাকা অনেক পরিবার নিজস্ব ভিটে ছেড়ে অন্যত্র বসতি স্থাপন করেছেন।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এম সুরুজ মিয়া বলেন, বর্তমানে এলাকাবাসীর মাধ্যমে পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন থেকে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ না পাওয়ায় অনেকটা সংকট মুহূর্তে আছি। পরিষদ তহবিল থেকে অতি শিগগিরই বর্ডার বেল্টে বিদ্যুাতায়নের ব্যবস্থা করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জাকির হোসেন জানান, হাতি বন্য প্রাণী হওয়ায় তাদেরকে ক্ষতিও করা যাবে না। এ বিষয়টি পশু সংরক্ষণ আইনে উলেখ করা আছে। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন