রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের আট নেতাকর্মীকে মারধরের জেরে এবার প্রকাশ্যে ইজারাকৃত বাগানের প্রায় সবগুলো গাছ থেকে লিচু লুট করেছে ছাত্রলীগ।
বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসের রোকেয়া হলের পেছনের গোদাগাড়ী বাগানে বিকাল ৪টার দিকে বিভিন্ন হলের বিশ-ত্রিশজন নেতাকর্মী ওই বাগান থেকে লিচু নামিয়ে বস্তা বোঝাই করে বিভিন্ন হলে নিয়ে যান।
এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে ওই বাগানে লিচু পাড়তে গেলে ছাত্রলীগের আট নেতাকর্মীকে মারধর করে বাগানের প্রহরীরা। এতে ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক কাননের দুই হাত ভেঙে যায় ও উপ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক মেহেদির পায়ে গুরুতর জখম হয়।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি প্রকল্পের কাছ থেকে এ বছর টেন্ডারের মাধ্যমে নগরীর ভদ্রা এলাকার আব্দুল্লাহ ইবনে মনোয়ার প্রায় এক লাখ ৫২ হাজার টাকায় ওই বাগানটি ইজারা নেন। তিনি বাগানটি পাহারা দেওয়ার জন্য প্রহরী নিযুক্ত করেন। ছাত্রলীগের সঙ্গে মারধরের ঘটনায় তাদের নামে মতিহার থানায় মামলা হয়। পরে তারা বাগানে আসা বন্ধ করে দেন। এই সুযোগে বৃহস্পতিবার বিকালে বিশ-ত্রিশজন একসঙ্গে বাগানের গাছগুলো থেকে লিচু নামানো শুরু
করেন। এ সময় গাছে থাকা কয়েকজন লিচুসহ ডাল কেটে ফেলেন।
জানা গেছে, ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ও শহীদ হবিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মনির, ওই হলেরই আরেক ছাত্রলীগ কর্মী এবং আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মিনহাজ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ছাত্রলীগ কর্মী মমিনুলসহ বেশ কয়েকজনকে লিচু পাড়তে দেখা যায়। পরে তাদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে মনির গণমাধ্যমকর্মীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার এবং তুই বলে সম্বোধন করেন।
এসময় মনির সাংবাদিকদের হুমকি দিয়ে বলেন, আমাদের ইচ্ছে হয়েছে লিচু পাড়াচ্ছি। তোদের যদি লিচু খাইতে ইচ্ছে হয় তবে তোরাও খা।
জানতে চাইলে বাগানের ইজারাদার আব্দুল্লাহ ইবনে মনোয়ার মুঠোফোনে বলেন, ‘ওইদিন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আমাদের ঝামেলা হয়েছিল। এরপর থেকে আর ওদিকে যাইনি। তবে এভাবে বাগান লুট করার ব্যাপারে আমি প্রশাসনের শরণাপন্ন হব এবং প্রয়োজনে আইনের আশ্রয় নেবো।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘ওইদিন রাতে ছাত্রলীগের আট নেতাকর্মী মুরাদ ও রুবেল নামের দুই প্রহরীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে লিচু পাড়ছিলেন। খবর পেয়ে তারা বাগানে আসলে তাড়াহুড়ো করে পালাতে গিয়ে কানন ও মেহেদি গাছ থেকে পড়ে যায়। তারা তাদেরকে ধরে মেরেছিলেন।’
রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘ওই ঘটনার পর থেকে বাগান ইজারা নেওয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা পলাতক রয়েছে। এই সুযোগে ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা হয়ত লিচু পাড়ছে।
গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মনিরের দুর্ব্যবহারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।’
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে এখনও কিছু শুনিনি।’
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন