কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে দুদু মিয়া (৩৮) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। পুলিশের দাবি, দুদু মিয়া তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন। নিহত দুদু মিয়া টেকনাফ উপজেলার সদর ইউনিয়নের নাজিরপাড়া এলকার বাসিন্দা মৃত সুলতান আহমদের ছেলে। পুলিশ বলছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাদক ব্যবসায়ীর তালিকায় ২৮৮ নম্বরে দুদু মিয়ার নাম রয়েছে।
নিহত দুদু মিয়ার বিরুদ্ধে ঢাকা, কক্সবাজার ও টেকনাফ থানায় নয়টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলা। অভিযানের সময় ঘটনাস্থল থেকে ৫টি দেশীয় অস্ত্র (এলজি), ১৩টি গুলি ও ৪ হাজার পিচ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) সঞ্জীব দত্ত, নিজাম উদ্দিন ও কনস্টেবল মোহাম্মদ ইব্রাহিম আহত হন।
শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের মুন্ডাল ডেইল সংলগ্ন মেরিন ড্রাইভ সড়কের সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
টেকনাফ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, গতকাল রাত নয়টার দিকে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের নাজিরপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুদু মিয়াকে আটক করা হয়। পরে তাঁকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাঁর দেওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তিতে রাত সাড়ে ১২টার দিকে দুদু মিয়াকে নিয়ে সাবরাং ইউনিয়নের মুন্ডাল ডেইল সংলগ্ন মেরিন ড্রাইভ সড়কের সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় মজুদ রাখা ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধারে গেলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দুদু মিয়ার সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়।
এ সময় এএসআই সঞ্জীব দত্ত, নিজাম উদ্দিন ও কনস্টেবল মোহাম্মদ ইব্রাহিম আহত হলে আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। তখন পালানোর সময় পুলিশ ও মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যেখানে পড়ে দুদু মিয়া গুলিবিদ্ধ হন। অপর সহযোগীরা পালিয়ে যায়। পরে গুলিবিদ্ধ মাদক ব্যবসায়ী ও তিনজন পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মাদক ব্যবসায়ী দুদু মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শহীদুল আলম বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই দুদু মিয়ার মৃত্যু হয়েছে। দুদু মিয়ার শরীরে তিনটি গুলির চিহ্ন রয়েছে। পুলিশের তিনজন সদস্যকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ওসি বলেন, নিহত মাদক ব্যবসায়ীর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। এ ঘটনায় মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
গত বছরের ৪ মে থেকে দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হয়। এ নিয়ে র্যাব-পুলিশ-বিজিবির সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধ ও এলাকায় মাদকের প্রভাব বিস্তারের ঘটনায় কক্সবাজার জেলায় ৯৮ ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এক রোহিঙ্গা নারীসহ ১৯ রোহিঙ্গা নাগরিক রয়েছেন। এর মধ্যে টেকনাফে ৬০ ও উখিয়ায় দুজন নিহত হন।
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ