কাঁচা ও অপরিপক্ক কলাকে হিট ও কেমিক্যাল দিয়ে পাকানো হচ্ছে। কলার কাদিঁর নিচে কেরোসিনের স্টোভ জ্বালিয়ে হিট দিয়ে পাকানো হয় এসব কলা। এতে ১২ ঘন্টার মধ্যে পেকে যাচ্ছে কলা।
তবে হিট দিয়ে পাকানো কলার ভিতরের অংশ সাধারণত শক্ত হয়। এসব কলা একেবারেই স্বাদহীন। এদিকে বিক্রির ক্ষেত্রে কলার দামের সাথে যোগ হচ্ছে এই কেরোসিন আর কার্বাইডের দাম। এতে ফলের স্বাদ যেমন কমেছে, একই সঙ্গে বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকিও।
দিনাজপুরের পার্বতীপুরসহ বিভিন্ন উপজেলায় এভাবে কাঁচা ও অপরিপক্ক কলা পাকিয়ে বেশি লাভ করে ভোক্তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলেছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। জেলার পার্বতীপুরের বিভিন্ন ফল মার্কেটে কাঁচা ও অপরিপক্ক এসব কলা প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ ভ্যান আসছে।
পার্বতীপুরের শহীদ মিনার রোডের এক ফল ব্যবসায়ী জানায়, কাঁচা ও অপরিপক্ক যে কোনো ফলই তাপ দিয়ে পাকানো সম্ভব। এ তাপ পদ্ধতিতে আম পাকাতে তিন দিন সময় লাগে। পেঁপে দুই দিন, কলা ১ থেকে ২ দিন। এভাবে কলা পাকানোর পর এখান থেকেই পাইকারি দরে বিক্রি হয়। পরে খুচরা ক্রেতাদের মাধ্যমে তা চলে যায় পার্বতীপুর উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারসহ প্রত্যন্ত গ্রামঞ্চলে।
পার্বতীপুরে শহরের রিয়াজনগর মহল্লার আজিজার রহমান (৬৩) নামে এক ভোক্তা বলেন, হিট দিয়ে কলা পাকানোর কারণে আগে একটি পেঁপে যেমন মিষ্টি লাগত, এখন সেটা মনে হয় না। তবে এতে প্রশাসনের নজরদারী থাকলে হয়ত এভাবে ফল পাকাতে পারতেন না ব্যবসায়ীরা।
পার্বতীপুর শহীদ মিনার সংলগ্ন রেলওয়ে মসজিদের পিছনে কয়েকজন ব্যবসায়ীর আড়তের মধ্যেই রয়েছে ইট দিয়ে তৈরি বিশেষ ধরনের ছোট ছোট ঘর। এই ঘরের মধ্যে একটি ছোট দরজা থাকে। দরজা দিয়ে কলাগুলো ভালো করে সাজানো হয়। এই আগুনের হিটেই কাঁচা ও অপরিপক্ক কলা পাকানো হয়। পরে পার্বতীপুর উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারসহ প্রত্যন্ত গ্রামঞ্চলে সেটি ছড়িয়ে পড়ে।
পার্বতীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুল্লাহেল মাফী জানান, এ ধরনের ফল খেলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি থাকে। একই সঙ্গে ফলের পরিপূর্ণ কোনো গুণাগুণ থাকে না। হিট দিয়ে পাকানো ফলের পুষ্টিগুণ ঠিক থাকে না। এসব ফল খেলে এলার্জিসহ নানা ধরনের চর্মরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সাধারণ ভোক্তাদের এ বিষয়ে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল