সাগরে ৬৫ দিন মাছ শিকার বন্ধের সরকারি সিদ্ধান্তের পুনঃবিবেচনা এবং তা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে টেকনাফ নৌকা মালিক সমিতি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার চত্বরে এ মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
টেকনাফ উপজেলা নৌকা মালিক সমিতির সভাপতি মো. বেলাল উদ্দীন মানববন্ধনে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।এছাড়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সরওয়ার আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টেকনাফ উপজেলা পরিষদের নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান নুরুল আলম।
মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন বাহার ছড়া ইউপি চেয়ারম্যান মাওলানা আজিজ উদ্দিন, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাংবাদিক জাবেদ ইকবাল চৌধুরী, সদর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. নুর মোহাম্মদ গণি, বাহার ছড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি দেলোয়ার হোছাইন, সাংবাদিক ইউনিটির সভাপতি মাওলানা সাইফুল ইসলাম সাইফী প্রমুখ।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ১০হাজার জেলে ও মালিক। সকাল থেকে গাড়ি ও মিছিল যোগে এসে সরকারি সিদ্ধান্তের পুনঃবিবেচনার দাবি জানান। এছাড়া এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন জেলে পরিবার।
মানববন্ধনে প্রধান অতিথি বক্তব্যে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আলম বলেন, নাফ নদীতে মাছ শিকার বন্ধ থাকায় অর্ধাহারে-অনাহারে জীবন কাটাচ্ছেন কয়েক হাজার জেলে পরিবার। এরপরও ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত সরকারিভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। একটানা মাছ শিকার বন্ধ থাকার ফলে বঙ্গোপসাগর ও নাফ নদ নির্ভর জেলে পরিবারগুলোতে নেমে এসেছে দুর্দশা।
তিনি আরো বলেন, বিকল্প কোনো আয়ের উৎস না থাকায় জেলে পরিবারের মধ্যে চলছে হাহাকার। অনেকেই দু’বেলা খাদ্য যোগাতে হিমশিম খাচ্ছেন। উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য কমকর্তাকে নিয়ে এ বিষয়ে উচ্চ পযার্য়ের নেতৃবৃন্দের সাথে আলাপ আলোচনা করে সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
বক্তারা আরো বলেন, দীর্ঘ দুই মাস যদি তাদের একমাত্র জীবিকা মাছ ধরা চালিয়ে না যেতে পারেন তাহলে তাদের পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করবে, পার্শ্ববর্তী বাজার গুলোতে মাছের সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়া টেকনাফে মিঠাপানির মাছ তুলনামুলকভাবে অনেক কম। ফলে নাফ নদী ও সাগরের মাছের উপর পুরো উপজেলা নির্ভরশীল। সমুদ্র ও নাফ নদীতে মাছ শিকার বন্ধের ফলে আয় রোজগার নেই। ফলে এক বেলা খেতে পারলেও আরেক বেলা খেতে খুব কষ্ট হচ্ছে।
টেকনাফ উপজেলা মৎস্য অফিসের পক্ষ থেকে জেলেদের পুর্নবাসনের কথা বলা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো সাহায্য পায়নি বলে বলে জানিয়েছেন জেলেরা। শিগগিরই ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি দাবি জানান জেলে পরিবার।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, জেলেরা একটি স্মারকলিপি প্রদান করেছে। সেটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রেরণ করা হবে। এদিকে ইয়াবা পাচার ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সরকারি নির্দেশে নাফ নদীতে মাছ শিকার বন্ধ রয়েছে। নতুন কোনো নির্দেশনা না আসায় উক্ত নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রয়েছে। এছাড়া এ সময়ের জন্য তালিকাভুক্ত জেলেদেরকে বিশেষ কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে ।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন