কক্সবাজারের টেকনাফে ঈদ উদযাপন করতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় তিন রোহিঙ্গা যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৪ জন রোহিঙ্গা। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। শুক্রবার দুপুরের দিকে টেকনাফের নোয়াখালী পাড়া মেরিন ড্রাইভ সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন উখিয়া বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের জি-ব্লকের মোহাম্মদ জুবাইর (১৭), একই ক্যাম্পের সি-ব্লকের মোহাম্মদ ইদ্রিস (৩০) ও নূর মোহাম্মদ (৪০)। অন্যরা উখিয়া বালুখালী ও থাইংখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সদস্য বলে ধারণা করছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, লেগুনায় করে ঘুরতে বের হওয়া একদল রোহিঙ্গা যুবক দুপুর ১টার দিকে টেকনাফের নোয়াখালীপাড়া মেরিন ড্রাইভে পৌঁছান। এসময় তাদের বহনকারী লেগুনাটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
পরে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সুমন বড়ুয়া ও টিটু চন্দ্র শীল আহতদের মধ্যে তিন রোহিঙ্গাকে মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসক টিটু চন্দ্র শীল বলেন, দুর্ঘটনায় তিন রোহিঙ্গা মারা গেছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ১৪ জন। এদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রদীপ কুমার দাস বলেন, ঈদ ভ্রমণ উপলক্ষ্যে শুক্রবার দুপুরে পিকআপ ভ্যান (চট্টমেট্টো-ন-১১-৭০৩৭) করে ২২ জন বহরের একদল রোহিঙ্গা গান-বাজনা ও নেচে উল্লাস করে কক্সবাজারের উদ্দেশ্য যাচ্ছিলো। পথে নোয়াখালী পাড়া মেরিন ড্রাইভ বরাবরে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক হতে ১৫ ফুট নীচে খাদে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই গাড়িতে থাকা তিন রোহিঙ্গা নিহত ও ১৪ জন আহত আহত হয়। তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে সেখানে নিহতদের মৃত্যু নিশ্চিত করার পর ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। নিহত ও আহতরা উভয়ই বালুখালী ও থাইংথালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল হাসান বলেন, মেরিন ড্রাইভ সড়কে মিনি ট্রাকের চালক বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোর কারণে দুর্ঘটনার ঘটেছে। এতে ঘটনাস্থলে তিন রোহিঙ্গা নিহত এবং ১৪ রোহিঙ্গা আহত হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গতকালও রোহিঙ্গা বোঝাই কয়েকটি গাড়ি সড়কে দেখে তাদের আবার ক্যাম্পে ফেরত পাঠিয়েছিলাম। ক্যাম্পে অন্যান্য সংস্থার দায়িত্বশীল যারা রয়েছেন তাদেরও নজরদারি বাড়ানো দরকার। যাতে রোহিঙ্গারা ক্যাম্প থেকে বের হতে না পারে।
বিডি-প্রতিদিন/০৭ জুন, ২০১৯/মাহবুব