ক’দিন পরই দুর্গোৎসব। দেবী দুর্গা আসছেন মর্ত্যলোকে। আর দেবীর অবয়ব তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন পালপাড়ার কারিগররা। ধরনীর শক্ত মাটি নরম করে নিপুন হাতে গড়ছেন দেব-দেবীর অবয়ব। প্রতিমা তৈরি শেষ। এখন রং-তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে প্রতিমাগুলো।
সরেজমিনে দেখা যায়, পালপাড়ায় প্রতিমা তৈরির ধুম পড়েছে। সকাল থেকে রাত অবধি চলছে প্রতীমা তৈরির কাজ। প্রতিমার সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করতে নারীরা নিপুন হাতে পরম যত্নে দেবীর মুকুট, হাতের বাজু, গলার মালা, শাড়ির পাইর, প্রিন্ট, ঠাকুরের চুল ও মাথা তৈরি করছেন। আর পুরুষেরা সেগুলো সঠিকভাবে লাগিয়ে মাটির প্রলেপ লাগিয়ে দিচ্ছেন। কেউ কেউ রং তুলিতে দেবীকে ফুটিয়ে তুলছেন। মন্ডপ কর্তৃপক্ষের চাহিদানুযায়ী প্রতিবছর দুর্গাপূজায় এ গ্রামে নানা ডিজাইনের প্রতিমা তৈরি হয়।
সিরাজগঞ্জসহ আশপাশের বগুড়া, নাটোর ও রাজশাহীসহ বিভিন্ন জায়গায় ১০ হাজার টাকা থেকে লক্ষাধিক টাকায় বিক্রি হয়ে থাকে প্রতিমা। তবে মৃৎ বা প্রতিমা শিল্পীরা বলছেন, প্রতিমা তৈরির উপকরণের দাম বৃদ্ধি পেলেও প্রতিমার দাম না বাড়ায় শিল্পটি হুমকির মুখে রয়েছে। সরকারী বা বেসরকারী প্রতিষ্ঠান থেকে কোন সুযোগ সুবিধাও তারা পাচ্ছে না। এ অবস্থায় সরকারী সুযোগ সুবিধা পেলে এ শিল্পের প্রসার ঘটাতে পারবেন বলে মনে করেন কারিগররা।
কামারখন্দের ভদ্রঘাট এলাকার প্রতিমা কারিগর শ্রী কান্ত পাল ও উজ্জল পাল বলেন, প্রতিমা গড়ার কাজ প্রায় ৯০ শতাংশ শেষ। এখন প্রতিমার রং-তুলির কাজ চলছে।
কারিগর জিতেন পাল জানান, প্রতিমা তৈরিতে ব্যয় বেড়েছে। খড়, সুতা ছাড়াও রংসহ অন্যান্য সরঞ্জামের দাম বেড়েছে। এ কারণে এবার প্রতিমা তৈরির অর্ডার কম নিয়েছেন। এ বছর ২০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৫৫ হাজার টাকা দামের প্রতিমা তৈরি করছেন তিনি।
সিরাজগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সন্তোষ কুমার কানু বলেন, এবছর জেলায় ৪৯৫টি মন্ডপে পূজার আয়োজন করা হয়েছে। সুষ্ঠু-সুন্দর ও উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা উদযাপন করার জন্য সবধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার টুটুল চক্রবর্তী জানান, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় এই উৎসব পালনে পূজা মন্ডপগুলোর সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের সাথে দফায় দফায় মতবিনিময় করা হচ্ছে। সুন্দর ও সুষ্ঠু পরিবেশে পূজা উদযাপন হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল