নাটোরের সিংড়া উপজেলার পাঁচ লাখ মানুষের চিকিৎসার দায়িত্বে আছেন মাত্র ২ জন। ৫০ শয্যাবিশিষ্ট এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকটে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সিংড়া উপজেলা তথা চলনবিলের সাধারণ মানুষ। হাসপাতালটিতে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি থাকলেও ডাক্তার সংকটে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে।
জানা যায়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে গড়ে প্রতিদিন ৭০০ রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। কিন্তু চিকিৎসক সংকটের কারণে প্রতিদিন শতাধিক রোগীকে ফিরে যেতে হয় চিকিৎসা না নিয়েই। দীর্ঘদিন থেকে জোড়াতালি দিয়ে হাসপাতালের চিকিৎসা চললেও এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেই উর্ধতন কর্তৃপক্ষের।
নাটোরের অন্যতম উপজেলা সিংড়া। এই উপজেলার লোকসংখ্যা পাঁচ লাখ। চলনবিলবাসীর শতভাগ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে ২০১৩ সালের ২৪ আগস্ট হাসপাতালটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। ৫০ শয্যার বিপরীতে সেই পরিমাণ জনবল নিয়োগ দেয়া হয়নি। তাই ৩১ শয্যার জনবল দিয়েই ৫০ শয্যার হাসপাতালটি পরিচালিত হচ্ছে।
বর্তমানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে ১৮ জন মেডিকেল অফিসারের পদ থাকলেও সেখানে আছেন মাত্র দুজন। আর ৩ জন কলসালট্যান্ট আছে। বর্তমানে নার্স, আয়া, ওয়ার্ড বয় ও পরিচ্ছন্নকর্মীসহ মোট ১৭টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র ৬ জন। এছাড়াও একজন আবাসিক মেডিকেল অফিসার হাসপাতালের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদ। সেটিও ২০১০ সাল থেকে শূন্য রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে মাত্র ২ জন মেডিকেল অফিসার দিয়ে জোড়াতালি দিয়ে চলছে চিকিৎসা কার্যক্রম।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. এএসএম আলমাস বলেন, সিডিউল করে তারা মাত্র ২ জন দায়িত্ব পালন করছেন। আর রাতে কোনো ডাক্তার দায়িত্ব পালন করছেন না। এখানে আরএমও পদটি খালি সেখানেও তিনি অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। আউটডোর, ইনডোর ও জরুরি বিভাগসহ গড়ে হাসপাতালে সারাদিন ৮০০ রোগীকে চিকিৎসা সেবা দিতে হচ্ছে। ইনডোরে ভর্তি রোগীর জন্য আমরা মেডিকেল অফিসার চেয়েছি কিন্তু কতদিনে তা পাব বলতে পারছি না।
সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা ডা. আমিনুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালটি ৫০ শয্যার হলেও জলবল সংকটের কারণে ৩১ শয্যা হিসেবে জলবলের হিসাব দেয়া রয়েছে। আর ২ জন মেডিকেল অফিসার পদায়ন থাকায় এই ৫০ শয্যার সেবা কার্যক্রম চালানো খুবই কষ্টকর হচ্ছে। কারণ এখানে রোগীর সংখ্যা বেশি আর চিকিৎসকের সংখ্যা কম। গড়ে ৭০/৮০ জন রোগী ভর্তি থাকে। যার জন্য সংকুলন হয় না।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক