নদী থেকে খননযন্ত্র (ড্রেজার) দিয়ে উভয় তীরেই উঠছে বালু। একপাশে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ ভাঙন। বিলীন হচ্ছে রাস্তা-ঘাট, ঘরবাড়ি, ফসলি জমি। ভিটেমাটি হারাচ্ছে মানুষ। ভাঙন রোধের পদক্ষেপও দিচ্ছে না কোন কাজ। এ পরিস্থিতিতে চরম উৎকণ্ঠায় দিনাতিপাত করছেন সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার সুরমা পাড়ের মানুষ।
ভাঙন রোধ ও বালু উত্তোলন বন্ধ না করলে বিলীন হয়ে যাবে কয়েকটি গ্রাম। বদলে যেতে পারে নদীর গতিপথ।
সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার লামাকাজি ইউনিয়নের পরগনা বাজারের পূর্ব দিয়ে প্রবাহিত সুরমা নদীর ভাঙনের মুখে পড়েছে কয়েকটি গ্রাম। ইতিমধ্যে নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে পিচঢালা পথ। বিকল্প পথে চলছে যানবাহন। এলাকার ১৫টি গ্রামের জনসাধারণের চলাচলের এটিই ছিল একমাত্র সড়ক। নদীর দু’তীরেই বালু উত্তোলন করছে বেশ কিছু খননযন্ত্র (ড্রেজার)। নদীর উত্তর তীরে সিলেটের জালালাবাদ থানা এলাকায় ও দক্ষিণ তীরে বিশ্বনাথ এলাকায় বালু তুলতে দেখা যায়।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন থেকে ওই এলাকায় ১৫-২০টি খননযন্ত্র বালু উত্তোলন করছে। এলাকাবাসী সম্মিলিত ভাবে বালু খেকোদের নিষেধ করলে তারা কর্নপাত করছেনা। তারা বলছে, ‘জালালাবাদ থানা এলাকার সীমানা থেকে বালু তুলছে। ওপারে বিশ্বনাথ এরিয়ায় ভাঙন দেখা দিলে তাদের কি?’ বিশেষ করে রাতের আঁধারে নদীতে বৃদ্ধি পায় ড্রেজার মেশিনের সংখ্যা। দিনের বেলা চালু রাখা হয় দু’চারটি মেশিন। মূলত বালু উত্তোলন শুরু হবার পর থেকেই ভাঙন বৃদ্ধি পেয়েছে। সড়কটিও গেছে নদীতে।
সড়ক বিলীন হওয়ায় লামাকাজি ইউনিয়নের নদী তীর ও তার পার্শ্ববর্তী গ্রাম রাজাপুর, আকিলপুর, রসুলপুর, তিলকপুর, আজারিগাঁও, কৃষ্ণপুর ও খাজান্সিগাঁও গ্রামের মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। কোন মতে বিকল্প পথ তৈরী করে যাতায়াত করছেন তারা। ভাঙন রোধে দেয়া বালির বস্তাও টিকছেনা তীরে। গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, প্রশাসন ড্রেজার মেশিন তুলে নিয়ে, মজবুত সুরক্ষা ব্যবস্থা দিলেই আমরা আশংকা মুক্ত হই।
স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী লোকমান হোসেন বলেন, নদী তীরের গ্রামগুলো রক্ষা করতে হলে বালু উত্তোলন ঠেকাতে হবে। না হলে রাস্তা আর ফসলি জমির মতো একদিন হারিয়ে যাবে গ্রামগুলোও।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বর্ণালী পাল বলেন, বিষয়টি আমি দেখছি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল