ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে বিলের কচুরিপানার নিচ থেকে মোঃ রাফি নামের আড়াই বছরের এক শিশুর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, হতাশা থেকে শিশু রাফিকে হত্যার পর তার মা বিলে লাশটি ফেলে দেয়।
শিশুটির মাকে আটকের পর আদালতে হাজির করলে সে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। আজ শনিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান জানান, গত বুধবার সকালের দিকে উপজেলার রূপসদি দক্ষিণ বাজারের পাশে বালিয়াদহ বিল থেকে শিশু রাফির লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। রাকিব রূপসদি দক্ষিণ পাড়ার প্রবাসী ফারুক মিয়ার ছেলে। লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ রাফির মা ও প্রবাসী ফারুক মিয়ার স্ত্রী সেনোয়ারা বেগম (২৭)-কে আটক করে।
সেনোয়ারা বেগম পুলিশ কে জানায়, তাদের ঘরে মোঃ ফাহিম (০৬) ও মোঃ রাফি আড়াই বছরের ছেলে সন্তান ছিল। তার স্বামী ৬ লক্ষ টাকা ঋণ করে সৌদি আরবে যায়৷ এরই মাঝে ছোট ছেলের মোঃ রাফির বিরল রোগ দেখা দেয়। মোঃ রাফি কোন স্থানে আঘাত পেলে কালসিটে হয়ে যেত ও কোন স্থান কেঁটে গেলে রক্ত পড়া বন্ধ হতো না। এই রোগের চিকিৎসা অনেক ব্যয় বহুল ছিল। তাই এই রোগের চিকিৎসা করাতে গিয়ে স্বামীর বিদেশ যাওয়ার সময় ঋণের টাকা পরিশোধ করতে পারছিলেন না। এই হতাশা থেকে গত বুধবার ভোরে ছেলে মোঃ রাফিকে কোলে করে বাড়ির পাশের বালিয়াদহ বিলে কাছে নিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে বিলে ফেলে দেয়। ছেলেকে হত্যার পর বিলে ফেলে দিয়ে বাড়িরে ফিরে এসে অচেতন হয়ে যায় সেনোয়ারা বেগম।
জ্ঞান ফিরে আসলে সে তার পরিবারের সদস্যদের জানায়, রাফিকে খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজির পর বিলে কচুরিপানার নিচে শিশু রাফির মরদেহ পাওয়া যায়।
নিহতের দাদা আশ্রাফ জালালী বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতের বিচারক তারান্নুম রাহাতের আদালতে রাফির মা সেনোয়ারা বেগম ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আলমগীর হোসেন, নবীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেহেদী হাসান, বিশেষ শাখার সহকারী পুলিশ সুপার আলাউদ্দিন চৌধুরী, ডিআইও-১ ইমতিয়াজ আহমেদ।
বিডি-প্রতিদিন/ সিফাত আব্দুল্লাহ