ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার আড়পাড়া এলাকায় আল আমিন নামে এক মাদ্রাসা ছাত্র হত্যার মোটিভ ও ক্লু উদ্ধার করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন পুলিশ অব ব্যুরো ইনভেস্টিগশন (পিবিআই) এর এসআই ও এএসআই পদমর্যাদার ৫ কর্মকর্তা।
হতকাল বুধবার রাতে তাদেরকে আটকে মারধর করা হয় বলে এমন দাবি করছেন আহত পুলিশ কর্মকর্তারা। আহতদের মধ্যে ২ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাকী তিনজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। আহতরা হলেন ঝিনাইদহ পিবিআইয়ের এসআই হাফিজুর রহমান, এসআই সোহেল রানা, এএসআই আব্দুল খালেক, এসআই বি এম হুমায়ুন কবির ও এএসআই জাফর।
আহত এসআই হাফিজুর রহমান জানান, বুধবার সকাল থেকে ক্লুলেস এই হত্যা মামলার তদন্তের জন্য আমরা আড়পাড়া গ্রামে অবস্থান নেই। রাত ১০ টার দিকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করা হয়। এরপর আগেই গ্রেফতার হওয়া আসামি সাব্বিরকে ওই ছুরি সম্পর্কে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি নেওয়া হচ্ছিল। এ সময় আসামির স্বজনরা অতর্কিত হামলা করে আমাকে একটি ঘরের মধ্যে আটকে রেখে মারধর করে। তারা এসআই হাফিজুরের দুই চোখের মধ্যে আঙুল ঢুকিয়ে পিঠে ও বুকে কিলঘুষি মারতে থাকে। খবর পেয়ে কালীগঞ্জ থানা ওসি মাহফুজুর রহমান মিয়া পুলিশ নিয়ে আড়পাড়া এলাকার মুশফিকুর রহমান ডাবলুর বাসা থেকে এসআই হাফিজুরকে উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার ওসি মাহফুজুর রহমান মিয়া জানান, বুধবার মধ্যরাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে অবরুদ্ধ পিবিআই সদস্য হাফিজকে উদ্ধার করা হয়। তাকে বেশ মারধর করা হয়েছে। আহত হাফিজুর রহমানকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঝিনাইদহ পিবিআইয়’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম.কে.এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন পিপিএম বলেন, কালীগঞ্জে মাদ্রাসা ছাত্র হত্যাকাণ্ডের তদন্তে যায় পিবিআই সদস্যরা। রাতে তাদের উপর অতর্কিত হামলা করা হয়। হামলায় ৫ পুলিশ আহত হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, হামলা করে হত্যাকাণ্ডের আলামত ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং আসামিদের ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। হামলার পর আসামি সাব্বিরের পিতা মুশফিকুর রহমান বাবা ডাবলু ও চাচা লাভলুকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় কালীগঞ্জ থানায় বৃহস্পতিবার মামলা করা হবে বলে পিবিআই সুত্রে জানা গেছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আসামি সাব্বিরের চাচা কালীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান বিজু ফোনে পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, ‘পিবিআই সারাদিন পুকুর ছেঁকে কোনও অস্ত্র পায়নি। রাতে রান্নাঘরে এসে ছোট একটি চাকু হাতে দিয়ে ছবি তুলে নিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় একজনকে ধরে রাখি।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৪ ডিসেম্বর কালীগঞ্জ শহরের আড়পাড়ায় আল আমিন নামে এক মাদ্রাসা ছাত্রকে গলাকেটে হত্যা করা হয়। মামলাটি মোটিভ ও ক্লুলেস ছিল। তদন্ত করে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে সাব্বির ও হৃদয় নামে দুই যুবককে পিবিআই আটক করে। তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক গতকাল বুধবার রাতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধারে অভিযান চালাতে গিয়ে পিবিআই সদস্যরা আসামির আত্মীয় স্বজন কর্তৃক হামলার শিকার হন।
বিডি-প্রতিদিন/ সিফাত আব্দুল্লাহ