২১ জানুয়ারি, ২০২০ ২১:৫৬

'অপমৃত্যু'র এক মাস ২২ দিন পর ইটভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে মামলা!

নাটোর প্রতিনিধি:

'অপমৃত্যু'র এক মাস ২২ দিন পর ইটভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে মামলা!

নাটোরের গুরুাসপুরে ইটভাটার ম্যানেজার নজরুল ইসলামের 'অস্বাভাবিক মৃত্যু'র এক মাস ২২ দিন পর ইটভাটার মালিকদের বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। নজরুল ইসলামের ছেলে শাহাবুদ্দিন বাদী হয়ে নাটোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে (গুরুদাসপুর) গত ৫ ডিসেম্বর ওই মামলাটি দায়ের করেন।

মামলায় ইটভাটার মালিক মো. জাহিদুল ইসলাম, ভাই বাবু, বাবা দশরত আলী ও ক্যাশিয়ার রান্টু প্রামানিককে আসামি করা হয়েছে। গত বছরের ১৩ অক্টোবর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নজরুল ইসলাম। 

গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মৃত্যু প্রমাণপত্র বলছে, গ্যাসটেবলেট পয়জনিংয়ে ১৩ অক্টোবর রাত সাড়ে ১১টার দিকে নজরুল ইসলামের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালটির আবাসিক চিকিৎসক মো. রবিউল করিম জানান,  স্থানীয় লোকজন হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে আসেন তাকে। দুইটি গ্যাস টেবলেট খেয়েছেন বলে জানান নজরুল ইসলাম। তখন ‘পয়জনিং’-এর চিকিৎসা দেওয়া হয় তাকে। পরিস্থিতির অবনতি হলে রাতেই  অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পথে মারা গেলে আবারও তাঁকে হাসপাতালে আনা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নজরুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করা হয়। এমর্মে হাসপাতাল থেকে মৃত্যু প্রমাণপত্র দেওয়া হয়েছে।

মামলার বাদী  নজরুল ইসলামের ছেলে শাহাবুদ্দিন  দাবি করেন, পৌরশহরে  খোয়ারপাড়া এলাকার  ‘মেসার্স দশরত ব্রিকস’-এ ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন তার বাবা।  ঘটনার দিন রাত ৯টার দিকে ইটভাটার গদীঘরে যাওয়ার জন্য বের হন। সেখানে ব্যবসায়ীক হিসাব-নিকাশ নিয়ে দ্বন্দ্বের এক পর্যায়ে গলাটিপে ও পাঁজরে আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেন শাহাবুদ্দিন। পরিস্থিতি বিবেচনায় তখন থানায় না জানিয়ে পোষ্ট মর্টেম ছাড়াই তাঁর বাবার লাশ দাফন করা হয়। তাঁর বাবার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতেই আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ইটভাটা মালিক মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, প্রতিষ্ঠানের প্যাড ব্যবহার করে গোপনে কমপক্ষে ৪০ লাখ টাকার ইট বিক্রি করে অগ্রীম টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলেন নজরুল ইসলাম। টাকা জমা না হওয়ায় ভাটা থেকে ইট সরবরাহ করা হয়নি। এ কারণে ক্রেতাদের টাকার চাপে পড়েন তিনি। লজ্জায় ক্ষোভে-দুঃখে গ্যাসটেবলেট খেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন নজরুল ইসলাম। এখন বাড়তি সুবিধা আদায় করতেই তাঁদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে।

গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাহারুল ইসলাম বলেন, নজরুল ইসলামের মৃত্যু নিয়ে তার পরিবারের পক্ষ থেকে থানাকে অবগত করা হয়নি। এ কারণে পুলিশ এ বিষয়ে অবগত নয়। আদালতে দায়ের করা হত্যা মামলার কপি হাতে পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।


বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর