বিয়ের সব ধরনের আয়োজন শেষ। চারদিকে ধুমধাম, কোথাও আয়োজনের কমতি নেই। কলা গাছ আর রঙিন কাগজ দিয়ে বিয়ের মণ্ডপও সাজানো হয়েছে। সানাইয়ে সুর। অতিথিদের পদভারে সরগরম বিয়ে বাড়ি। শিশুদের আনন্দ উল্লাসে মুখরিত চারপাশ। পুরোহিতও এসে হাজির। কনে সাজিয়ে এনে বসানো হলো পিঁড়িতে। বাড়ির লোকজনের তাড়াহুড়ো-কারণ লগ্ন হয়েছে। এমন সময়ই বাঁধলো বিপত্তি।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা পুলিশ নিয়ে হাজির বিয়ে বাড়িতে। নিমিষেই সব পরিণত হলো হরিষে বিষাদে। আনন্দমুখর বিয়ে বাড়িটি এখন সুনসান নিরবতা। কনের বয়স না হওয়ায় বিয়ে ভেঙে দিয়েছে প্রশাসন। ঘটনাটি ঘটেছে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার পাইকপাড়া ইউনিয়নের দামের চর গ্রামে বুধবার রাত নয়টার দিকে। আর বিয়ের আয়োজক ছিলো দুটি সংখ্যালঘু পরিবার।
জানা যায়, ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার নুরুল্লাহপুর ইউনিয়নের উচ্চা বাজার এলাকার অচিন্ত রায় তার এসএসসি পরীক্ষার্থী মেয়ে চম্পা রায়কে (১৫) মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার উমেদপুরের সুশান্ত রায়ের সঙ্গে বিয়ে দিচ্ছেন। পার্শ্ববর্তী রাজৈর উপজেলার দামের চর গ্রামে চম্পার নানা বাড়িতে গোপনে তার এই বিয়ের আয়োজন চলে।
রাজৈর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ নিয়ে বিয়ে বাড়িতে হাজির হন। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কনে দৌড়ে ঘরে পালিয়ে যায়। প্রশাসনের হস্তক্ষেপের খবর পেয়ে বর আর বিয়ে বাড়িতে পৌঁছানোর সাহস করেননি। মাঝপথেই বরযাত্রী নিয়ে সুশান্ত রায় মানে মানে কেটে পড়লেন।
পরে চম্পা রায় বলে, আমি এবার এসএসসি পরীক্ষা দেবো। এ সময় আমি বিয়ে করতে চাইনি। বাবা-মা অনেক জোর করে আমার বিয়ে দিচ্ছিল। আমি পড়াশুনা করতে চাই। রাজৈর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার জানান, এসএসসি পরীক্ষার্থীকে জোর করে বিয়ে দেওয়ার তথ্য পেয়ে পুলিশ নিয়ে রাতে বিয়ে বাড়ি গিয়ে বাল্যবিয়ে ভেঙে দিয়েছি। বাল্যবিয়ের আয়োজনের দায়ে কনের বাবা-মাকে আটকের পর মুচলেকা আদায় করে ছেড়ে দেওয়া হয়।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন