নড়াইলের লোহাগড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা বদর খন্দকারকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারপূর্বক ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। লোহাগড়া উপজেলাবাসীর ব্যানারে মঙ্গলবার টি-চরকালনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে এসব কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে নিহত বদর খন্দকারের আট বছরের শিশু সন্তান সাঈদ ও স্ত্রী নাজমিন বেগম হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি জানান। এছাড়া বক্তব্য দেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন, নিহত বদরের বড় ভাই বাবর খন্দকার, মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা প্রমুখ।
মামলা বিবরণে জানা যায়, সামাজিক বিরোধ ও পূর্বশত্রুতার জের ধরে লোহাগড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা বদর খন্দকারকে কুপিয়ে হত্যা করে আসামিরা। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৬টার দিকে লোহাগড়া-নড়াইল সড়কের টি-চরকালনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে বদরকে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে সন্ত্রাসীরা। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে রাত ৯টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বদর লোহাগড়া ইউনিয়নের চরবগজুড়ি গ্রামের ময়ের আলীর ছেলে এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য ছিলেন। ধারালো অস্ত্রের কোপে বদর খন্দকারের বাম হাতের তিনটি আঙ্গুল এবং ডান হাতের কবজি প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এছাড়া দুই পায়ের হাটুর নিচ থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন ছিল। ঘটনার দিন বদর খন্দকার চরকালনা এলাকায় নিজের ইটভাটা থেকে মোটরসাইকেলযোগে বাড়িতে ফিরছিলেন। এ সময় বদরের কাছে ইট বিক্রির সাড়ে ৪ লাখ টাকা থাকলেও আসামি আকবর খন্দকার ওই টাকা নিয়ে গেছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় বদর খন্দকারের স্ত্রী নাজমিন বেগম বাদী হয়ে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে লোহাগড়া থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও লোহাগড়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান নজরুল শিকদারকে (৪৫)। অন্য আসামিরা হলেন নজরুল শিকদারের বড় ভাই ইবাদত শিকদার, ভাইপো জাকারিয়া শিকদার ওরফে গফফার, ভাগ্নে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক উপ-সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল আজাদ সুজন, চাচাতো ভাই এনায়েত শিকদারসহ ১৬ জন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা লোহাগড়া থানার এসআই মিলটন কুমার দেবদাস জানান, এ পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরা হলেন মতিউর রহমান মুন্না মোল্যা, রুহুল আমিন, রফিক মোল্যা, আলী মিয়া মোল্যা ও বাবু মোল্যা। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে এজাহারভুক্ত আসামি মুন্না মোল্যা গত ২৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় নড়াইলের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমাতুল মোর্শেদার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকরোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আওয়ামী লীগ নেতা বদর খন্দকার হত্যায় নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেন। এসআই মিলটন কুমার দেবদাস বলেন, অন্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক