কুষ্টিয়ায় স্ত্রী শারমীন আক্তার ভানুকে (২৫) হত্যার দায়ে স্বামী দেলোয়ার হোসেন আপনকে (৩০) ১০ বছর কারাদণ্ডসহ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। বুধবার বেলা ১১টায় কুষ্টিয়ার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক অরূপ কুমার গোস্বামী আসামির উপস্থিতিতে এই রায় দেন। সাজাপ্রাপ্ত আপন সুনামগঞ্জ জেলার কান্দিগাঁও গ্রামের মাসুক মিয়ার ছেলে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৮ মার্চ গভীর রাতে খোকসা উপজেলার পাইকপাড়া মির্জাপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে গৃহবধু শারমীন আক্তার ভানুকে (২৫) কে বা কারা হত্যা করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই সামছুল আলম বাদী হয়ে খোকসা থানায় নিহতের স্বামী দেলোয়ার হোসেন আপনসহ অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে দেলোয়ার হোসেন আপনের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ৩১ আগষ্ট আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ।
মামলাটির মোটিভ সম্পর্কে প্রসিকিউশন সূত্রে জানা যায়, এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামি আপন মোবাইল ফোনে পরিচয়ের ভিত্তিতে শারমীন আক্তার ভানুকে বিয়ে করেন। আপন ছিলো নিহত ভানুর দ্বিতীয় স্বামী, প্রথম স্বামী এক কন্যা সন্তান রেখে বিষপানে আত্মহত্যা করেন। আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, নিহত ভানুর প্রথম স্বামী স্ত্রীকে অনৈতিক সম্পর্করত অবস্থায় দেখে উত্তেজিত হয়ে স্ত্রীকে হত্যা না করে নিজেই আত্মহত্যা করেছিলেন।
একই কারণে নিহতের দ্বিতীয় স্বামী আপন আত্মহত্যা না করে স্ত্রীকে হত্যা করেছেন বলে প্রতীয়মান হওয়ায় ইতোপূর্বে উচ্চ আদালতের একটি রায়ের সাথে সাদৃশ্য বিবেচনায় এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়টিকে ‘উত্তেজিত নরহত্যা’ বিবেচনায় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারার পরিবর্তে ৩০৪ ধারার অপরাধ হিসেবে আমলে নেওয়া হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌশুলী অনুপ কুমার নন্দী জানান, স্ত্রীকে হত্যার দায়ে করা মামলায় স্বামী আপনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগটিকে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে উত্তেজিত হত্যাকাণ্ড হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারায় ১০ বছর কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর সাজা খাটতে হবে বলে আদালত রায়ে বলেছেন।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন