ফেনীর সোনাগাজীতে জেঠা শশুরের পাশবিকতার শিকার হয়ে গর্ভবতী হওয়া আলোচিত সেই গৃহবধূ আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। রবিবার ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে গৃহবধূর ২২ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তানিয়া ইসলাম।
ওই নির্যাতিতা গৃহবধূ জবানবন্ধিতে আদালতকে জানান, 'গত বছরের ১৮ জুন তাকে ধর্ষণ করেন জেঠা শ্বশুর শফি উল্যাহ। ওই সময় ঘরে কেউ ছিল না। ভয়ে তিনি কাউকে কিছু জানান নি। পরে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে জানতে পারেন তিনি গর্ভবর্তী। পরবর্তীতে শাশুড়িকে জানালে তার পরামর্শে এ ঘটনায় জেঠা শ্বশুর শফি উল্যাহকে আসামি করে গত ২২ নভেম্বর সোনাগাজী মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলার পর হুমকির মুখে এলাহিগঞ্জ এলাকার স্বপন নামের এক মামার বাড়িতে আশ্রয় নেন তিনি। স্বপনের সাথে জেঠা শশুরের ছেলে রিয়াদের যোগসাজশে ২৬ নভেম্বর অভিযুক্ত শফি উল্যাহ ফেনীর আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করেন। এসময় আমার থেকে স্বাক্ষর নেয়া একটি কাগজ আদালতে জমা দেয়া হয়। আদালত আসামিকে জামিন দিয়ে আমাকে ১৫ দিনের জন্য কারাগারে প্রেরণ করেন। এরপর কারাগার থেকে বের হলে স্বপন ও রিয়াদ জামিন করিয়েছে বলে দেবিপুর এলাকার একটি বাসায় আমাকে নিয়ে যায়। দুইদিন পর ট্রাংক রোডের একটি হাসপাতালে নিয়ে তারা দুজনসহ আরও একজন মিলে আমাকে অস্ত্র দেখিয়ে জোরপূর্বক ওষুধ খাইয়ে ও ইনজেকশন দিয়ে অচেতন করে সন্তান প্রসব করায়। সন্তানটি মৃত ছিল। পরবর্তীতে ওই বাসায় নিয়ে আমাকে আটকে রাখে।
আদালতের বিচারক জবানবন্দি রেকর্ড শেষে নির্যাতিতাকে সোনাগাজী আমলী আদালতের বিচারক ধ্রুব জ্যোতি পালের আদালতে প্রেরণ করেন। একইসাথে আগামী ১৩ এপ্রিল পুলিশ রিপোর্ট প্রদানের নির্দেশ দেন। অভিযুক্ত মহিলাকে এডভোকেট এম. শাহজাহান সাজুর জিম্মায় জামিন প্রদান করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সোনাগাজী মডেল থানার এস.আই মো. আনোয়ার হোসেন জানান, এই ধর্ষণের ঘটনায় জেঠাশশুর হাজী শফি উল্যাহর বিরুদ্ধে গৃহবধূর করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায় রয়েছে। ভিকটিমকে অপহরণ করে অস্ত্রের মুখে গর্ভপাত ঘটানোর সাথে যাদের নাম উঠেছে তাদের আইনের আওতায় আনতে চেষ্টা চলছে।
প্রসঙ্গত, জেঠা শ্বশুরের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করায় গত ৯ ডিসেম্বর ফেনীর আদালত পাড়া থেকে অপহরণের শিকার হন উপজেলার ছাড়াইকান্দি এলাকার ওমান প্রবাসীর স্ত্রী। ১৪ মার্চ সদর উপজেলার শর্শদী ইউনিয়নের পূর্ব দেবীপুর এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার