বগুড়ার নন্দীগ্রামের বুড়ইল ইউনিয়নের পোঁতা গ্রামে ঘরের মধ্যে দুই বছরের শিশু সন্তানের মৃত্যুর পর মা লিপি রাণী বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন। বুধবার ভোররাতে এ ঘটনার পর লাশ দুটি উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। থানা পুলিশ এ খবর নিশ্চিত করে জানায়, পুরো ঘটনা নিয়ে তদন্ত চলছে।
এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগে বলা হচ্ছে, ঘুমের মধ্যে শিশুটি চাপা পরে মারা যাওয়ার পর মা লিপি বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। অপরদিকে বলা হচ্ছে নিজের শিশু সন্তানকে হত্যার পর সে আত্মহত্যা করে।
জানা গেছে, জেলার নন্দীগ্রামের বিপুল বর্মন দুপচাঁচিয়া উপজেলায় একটি চাল কলে শ্রমিকের কাজ করেন। এ কারণে তিনি সেখানেই অবস্থান করেন। মাঝে মধ্যে স্ত্রী সন্তানের খবর নিতে বাড়িতে আসেন। কিন্তু সস্প্রতি সময়ে করোনাভাইরাসে প্রাদুর্ভাবের কারণে যানবাহন না থাকায় বিপুল বর্মন নিয়মিত বাড়িতে আসতে পারেন না। বাড়িতে বিপুলের বাবা-মা এবং স্ত্রী সন্তান বসবাস করেন। বুধবার ভোর রাত ৪টার দিকে বিপুলের স্ত্রীর চিৎকার দিলে শ্বশুর–শাশুড়ি জেগে উঠে দেখতে পায় নাতি বাপ্পীর (২) মৃতদেহ বিছানায় পড়ে আছে এবং পুত্রবধূ বিষপান করে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এসময় প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় লিপিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কিছুক্ষণ পর সে মারা যায়।
লিপির ভাই আনন্দ বর্মন বলেন, ৫ বছর আগে তার বোনের বিয়ে হয়েছে। বিয়ের পর থেকেই তার শ্বশুড়বাড়ির লোকজন তাকে পছন্দ করতো না। কারণে-অকারণে তার বোনকে মানসিক নির্যাতন করতো। আর একারণেই হয়তো সন্তানকে হত্যা করে তার বোন আত্মহত্যা করতে পারে।
বগুড়ার নন্দীগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শওকত কবীর জানান, ঘটনাটি নিয়ে প্রতিবেশীরাও তেমন কিছু বলতে পারছেন না। মা-ছেলের মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে তদন্তে শিশুটির শরীরে কোন দাগ দেখা যায়নি। ঘুমের মধ্যে কোন ঘটনায় মারা যেতে পারে। তারপরও পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক