করোনাভাইরাসের কারণে কেউ কোয়ারেন্টাইনে, অনেকেই ঘরে বন্দি জীবন পার করছেন। কিন্তু এই দুর্বিষহ অবস্থার মধ্যেও বসে নেই কিশোরগঞ্জের পল্লী চিকিৎসকরা। করোনাঝুঁকির মধ্যেই তারা দিনরাত মানুষকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
পল্লী চিকিৎসকদের সংগঠন রুরাল মেডিকেল এসোসিয়েশন (আরএমএ) সূত্রে জানা গেছে, জেলায় পাঁচ হাজারেরও বেশি পল্লী চিকিৎসক রয়েছেন। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার পর থেকেই তারা মানুষকে সচেতন করা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শসহ প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। তাদের কেউ কেউ ব্যক্তিগত উদ্যোগে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রি (পিপিই) সংগ্রহ করতে পারলেও বেশিরভাগেরই তা নেই।
এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জ জেলা আরএমএ সভাপতি ও এ্যাপোলো হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান সেলিম জাবেদ জানান, সকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত আমরা শুধু ফার্মেসীতে বা ক্লিনিকেই সময় দিচ্ছি না, অনেকের বাড়ি বাড়ি গিয়েও সেবা দিয়ে যাচ্ছি। ইনজেকশন বা স্যালাইন পুশ করা থেকে শুরু করে নানা রকম প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা প্রত্যন্ত অঞ্চল, এমনকি জেলা শহরেও পল্লী চিকিৎসকরাই দিয়ে থাকি। কিন্তু আমাদের কোন সুরক্ষা সামগ্রী নেই। করোনার এই অবস্থায় অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই আমাদেরকে কাজ করতে হচ্ছে।
সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম রাজু ও সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে সাধারণ রোগীরা হাসপাতালমুখী হচ্ছে না। তারা পল্লী চিকিৎসকদের দরজাতেই কড়া নাড়ছেন। নিজেদের কাজ ফেলে রেখে হলেও আমরা তাদেরকে সেবা দিয়ে যাচ্ছি।
সাংগঠনিক সম্পাদক সালামত উল্লাহ বলেন, আমাদের বেশিরভাগ সদস্যেরই অর্থনৈতিক অবস্থা ভাল নয়, এ অবস্থার মধ্যেও আমরা ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছি। আমাদেরকে পিপিই সরবরাহ করা হলে আমরা আরও উৎসাহ নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যেতে পারবো।
কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মুজিবুর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার সাথে পল্লী চিকিৎসকরা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বর্তমান প্রেক্ষাপটে তারা শুধু মানুষকে পরামর্শই দিচ্ছেন না, অনেক এলাকা লক ডাউনের মধ্যেও তারা মানুষকে করোনার বিষয়ে সচেতন করাসহ প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি মনে করেন।
বিডি-প্রতিদিন/সিফাত আব্দুল্লাহ