দিনাজপুরে উৎপাদিত সবজির দাম নিম্নমুখী। করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়েছে তৃণমূল কৃষিতে। করোনার কারণে সবজির বাজারে ধস নামায় কৃষকের মাথায় হাত। উৎপাদিত সবজিসহ ফসলের দাম না পাওয়ায় হতাশায় কৃষক।
উৎপাদিত ফসলী চারা, উৎপাদিত ফসল, সবজি, দুগ্ধ উৎপাদন, মৌখামারসহ কৃষিতে দাম পাচ্ছে না কৃষক ও খামারীরা।
আবাদকৃত সবজির মধ্যে করলা, কাঁচা মরিচ, ক্ষিরা, বেগুন, মিষ্টি কুমড়া, লাউ, টমেটো, পাতাকপি ইত্যাদি পানির দরে বিক্রি হচ্ছে। করোনাভাইরাসের পূর্বে কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি বিক্রি হতো ৬০ টাকা। সেই কাঁচা মরিচ এখন মাত্র ৮ থেকে ১০ টাকা কেজি। প্রতি কেজি টমেটো পূর্বে বিক্রি হতো ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি। করোনার কারণে এখন প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৩ থেকে ৫ টাকা দরে।
এছাড়াও করলা পূর্বে বিক্রি হতো ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি তা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৫ টাকা কেজি। একইভাবে মিষ্টি কুমড়া, লাউ, বেগুন, ক্ষিরা, বটবটি, লালশাকসহ বিভিন্ন প্রকারের সবজি পানির দরে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু নেওয়ার মতো ক্রেতা নাই। ফলে কৃষক মাঠ থেকে সবজি তুলে এনে বাজারে বিক্রি করতে পারছেন না। তবে এসব সবজি ব্যবসার পাইকরার লাভ করলেও লোকসানে পড়েছে কৃষক।
বিরামপুর উপজেলার দিওর ইউপির মঙ্গলপুর গ্রামের কৃষক শাহিন ফেরদৌস এবার উৎপাদন করেছিলেন কাঁচা মরিচ, বেগুন, করলা, শশা, মিষ্টি কুমড়ার চারা। হাটবাজার বন্ধ থাকায় বিক্রি করতে পারছেন না। ফলে উৎপাদিত শশা চারা নষ্ট হয়ে লোকসানের মুখে পড়েছেন তিনি। মাঠেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে চারা।
একই এলাকার কৃষক জিল্লুর রহমান, ৩ বিঘা জমিতে লাগিয়েছেন টমেটো। বিরামপুরে টমেটোর বাজার মূল্য প্রতি কেজি দেড় টাকা। টমেটো উৎপাদন, বাজারজাত করণ, পরিবহন সব মিলিয়ে টমেটোতে লোকসান। ফলে কৃষকদের উৎপাদিত টমেটো পঁচে যাচ্ছে ফসলের মাঠেই। কেউ কেউ খাওয়াচ্ছেন গরুকে।
দিনাজপুর সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউপির ঘুঘুডাঙ্গা এলাকার কৃষক আশরাফুল আলম জানান, করোনার আগে যে কাঁচা মরিচের মূল্য ছিল ৯০/১০০ টাকা কেজি, তা এখন ১৭/২০ টাকা কেজি। করলা বর্তমানে পাইকারি বাজারে বিক্রি করছেন ৬/৭ টাকা কেজি যা পূর্বে ছিল ২০/২৫ টাকা কেজি। একইভাবে দাম পাচ্ছে না দুধ, কয়েল পাখির ডিম, মধু উৎপাদনকারী খামিরারা।
সবজি আবাদে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে যথাসময়ে বিনা সুদে কৃষি প্রণোদনার অর্থ সঠিকভাবে বিতরণের জন্য এবং ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা সঠিকভাবে প্রণয়নের জন্য দাবি জানান বিভিন্ন এলাকার কৃষক।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন