করোনাভাইরাসের সংক্রামণ প্রতিরোধে ঘরবন্দি মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলার মানুষ। লকডাউনের কারণে দিনে এ উপজেলা গুলোতে কিছু রিকশা, সিএনজি চালিত অটোরিকশা, টমটম ও ছোট গাড়ি চলাচল করলেও সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে নিস্তব্ধ হয়ে পড়ে শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ শহরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের ছোট-বড় হাট বাজার। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া কাউকেই ঘরের বাইরে বের হতে দিচ্ছে না প্রশাসন। যে কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন এই দুই উপজেলার খেটে খাওয়া, হতদরিদ্র মানুষেরা।
তাছাড়া এই ঘরবন্দি জীবন যত দীর্ঘ হচ্ছে মধ্যবিত্ত পরিবার গুলোতেও শুরু হয়েছে টানাপূরণ। তাই এসব অসহায় মানুষের ঘরে ঘরে নিত্যপণ্য পৌঁচ্ছে দিচ্ছেন শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুজ্জামান। প্রতি রাতেই মানুষ যখন ঘুমিয়ে পড়ে তিনি তখন তার সরকারি গাড়ির পেছনে নিত্যপণ্যের প্যাকেট নিয়ে বের হন। ছোটে চলেন যারা দিনের বেলায় খাবারের জন্য তার মোবাইলে ফোন করেছিল বা ম্যাসেজ দিয়েছিল তাদের বাড়ি।
গত চারদিনে তিনি এই দুই উপজেলার ১ হাজার ২০০ পরিবারকে খাদ্য সহায়তা করেছেন। গত বুধবার রাতে কমলগঞ্জ উপজেলার ২ নং পতনউষার ইউনিয়নের বৈধ্যনাথপুর (রাঙ্গাটিলা) ও আলী নগড় গ্রামে নিম্ন আয়ের মানুষেকে তিনি খাদ্য সহায়তা করেন।
এর আগের রাতে শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভুনবীর ইউনিয়ন ও কালাপুর ইউনিয়ন ও মতিগঞ্জ বাজারে হতদরিদ্রদের বাড়ি বাড়ি নিত্যপণ্য পৌঁছে দেন।
শ্রীমঙ্গল উপজেলার রাজপাড়া গ্রামের দিলারা বেগন জানান, তার দুই ছেলে নারায়ণগঞ্জ থেকে আসায় তাদের বাড়িতে থাককে বলা হয়েছেল। কিন্তু পাঁচ দিন ধরে ঘরে খাবার ছিল না। পরে এসএসপি আশরাফুজ্জামান স্যারকে ফোন দিলে তিনি রাতে বাড়িতে এসে দুই খাদ্যসামগ্রী দিয়ে যান।
সহকারী পুলিশ সুপার আশারাফুজ্জামান, দেশের এই দুঃসময়ে যদি মানুষের পাশে না দাঁড়াই তাহলে কোন সময় দাঁড়াবো। আমি রাতে খেয়ে দিব্বি ঘুমিয়ে পড়বো আর এ শহরের অনেক মানুষ না খেয়ে থাকবে এটার নাম তো মানবতা না। তাই দেশের এই দুর্যোগে যতটুকু পারছি আসহায় সানুষের সাহায্য করছি। এই সময়ে প্রতিটি এলাকার বিত্তশালীদের তাদের এলাকার হতদরিদ্রদের পাশে দাঁড়ানো উচিত।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন